S jaishankar

S Jaishankar: প্রশ্নের মুখে দিল্লির তালিবান নীতি

গত সপ্তাহে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর রাশিয়া সফরে গিয়ে  সে দেশের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে আফগানিস্তান নিয়ে আলোচনা করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২১ ০৬:০৫
Share:

ফাইল চিত্র।

আফগানিস্তানে তালিবান তাণ্ডবের পটভূমিতে প্রশ্ন উঠল ভারতের কাবুল-নীতি নিয়ে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, সে দেশে শান্তি ফেরানোর জন্য ‘সমস্ত পক্ষের’ সঙ্গে আলোচনা করছে ভারত। ক্রমশ স্পষ্ট হয়, নিজেদের নীতি বদলে তালিবানের সঙ্গেও আলোচনার দরজা খুলেছে সাউথ ব্লক। আপাতত সূত্রের খবর, সেই দরজা ভাল করে খোলার আগেই বার বার ধাক্কায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম।

Advertisement

গত সপ্তাহে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর রাশিয়া সফরে গিয়ে সে দেশের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে আফগানিস্তান নিয়ে আলোচনা করেন। তাতে স্পষ্ট, তালিবানের সঙ্গে আলোচনার আগের অবস্থান থেকে পিছু হঠছে নয়াদিল্লি। পরপর ইরান এবং মস্কো গিয়েছিলেন জয়শঙ্কর। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এই দুটি দেশেই তাঁর সফরের ঠিক আগের দিন তালিবান প্রতিনিধি দলকে অভ্যর্থনা জানিয়েছিল ইরান এবং রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রক। রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জয়শঙ্করকে জানান, তালিবানের কাছ থেকে তাঁরা প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন যে আফগানিস্তানের বাইরে তাদের বুটের ছাপ পড়বে না। অর্থাৎ রাশিয়া অথবা মধ্য এশিয়ার নিরাপত্তা বিঘ্নিত করবে না তালিবান। সূত্রের খবর, লাভরভ জয়শঙ্করকে এ-ও জানান, তালিবান আফগানিস্তানের বাইরে সন্ত্রাস না ছড়ালে রাশিয়াও নাক গলাবে না।

মস্কোর এ হেন অবস্থানের বিরোধিতা করে ভারতের বিদেশমন্ত্রী বলেন, তালিবান যদি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে না গিয়ে হিংসার মাধ্যমে আফগানিস্তানের দখল নেয়, তা হলে তাকে বৈধতা দেওয়া চলে না। রাশিয়ার তা ভাবা উচিত।

Advertisement

কূটনৈতিক শিবিরের প্রশ্ন, আজ হঠাৎ কেন ‘বৈধতার’ প্রশ্ন তুলতে হচ্ছে জয়শঙ্করদের? কারণ, এই তালিবানের সঙ্গেই তো দোহা এবং অন্যান্য জায়গায় নিঃশব্দে অনেক দিন ধরেই যোগাযোগ তৈরি করেছেন ভারতীয় নেতৃত্ব।

দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার সামগ্রিক নিরাপত্তা, পাকিস্তানের মদতেপুষ্ট তালিবানকে নিয়ে ভারতের আশঙ্কার কথাও তাদের জানানো হয়েছে বিভিন্ন ভাবে। তা হলে আজ তালিবানকে নিয়ে রাশিয়ার (এবং ইরান) মতো নিশ্চিন্ত কেন নয় ভারত? আজ হঠাৎ তাদের ‘রাজনৈতিক বৈধতা’ নিয়ে চিন্তিতই বা কেন? পাশাপাশি আফগানিস্তানে হিংসা হঠাৎ যে বেড়ে যাবে, তার কি কোনও আগাম আন্দাজ তালিবানের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া যায়নি? শেষ মুহুর্তে বায়ুসেনার বিমান পাঠিয়ে আপৎকালীন ভিত্তিতে ভারতীয় কূটনীতিকদের কার্যত মৃত্যুমুখ থেকে ফেরাতে হচ্ছে কেন? এত আলোচনার পর এ টুকু আশ্বাস কি পাওয়া যায়নি যে ভারতীয় দূতাবাসগুলি নিরাপদ থাকবে অথবা আগাম সতর্কবার্তা পাওয়া যাবে, যাতে যথেষ্ট আগেই ভারত কর্মীদের ফিরিয়ে আনাতে পারে?

আমেরিকা, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর, পাকিস্তান তথা আইএসআই–এর মদতে গড়ে ওঠা জঙ্গিসংগঠন যাতে ওই অঞ্চলে প্রভাব বাড়াতে না পারে সে জন্যই নয়াদিল্লি সংযোগ তৈরি করছিল তালিবানের সঙ্গে। এখন প্রশ্ন উঠছে, পাকিস্তানের ‘ইন্ধনেই’ কি ভারতের মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিল তারা? প্রশ্নগুলি ভারতের আফগানিস্তান সংক্রান্ত নীতিকে ঘোলাটে করে দিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement