ইজ়রায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত ইরান। —ফাইল চিত্র।
ইজ়রায়েলের সঙ্গে শত্রুতা কি শেষ করতে চাইছে ইরান? ইজ়রায়েল এবং আমেরিকার সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসতে চায় তারা? মার্কিন সংবাদপত্র ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ইজ়রায়েল এবং আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় বসার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করছে তেহরান। তবে সরাসরি ইজ়রায়েল বা আমেরিকাকে এই প্রস্তাব দেয়নি ইরান। মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমেই এই প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেছেন পশ্চিম এশিয়া এবং ইউরোপীয় কর্তারা।
ইরান এবং ইজ়রায়েলের সংঘাতে উত্তপ্ত পশ্চিম এশিয়া। গত চার দিন ধরে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। ইজ়রায়েল ক্রমাগত ইরানে হামলার তেজ বৃদ্ধি করছে। ইরানের উপর গত শুক্রবার থেকে হামলা চালাচ্ছে ইজ়রায়েল। ইরানও পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইজ়রায়েলের উপর। এই পরিস্থিতিতে ইজ়রায়েল-ইরান সম্পর্কের রসায়ন কি পাল্টাবে? ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, তেহরান মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়েছে, আমেরিকা যদি যুদ্ধে যোগ না দেয়, তবে তারা আলোচনার টেবিলে বসতে রাজি। অর্থাৎ, যত ক্ষণ ইরান-ইজ়রায়েল সংঘাত থেকে দূরে থাকবে আমেরিকা, তত ক্ষণ তেহরানের দিক থেকে আলোচনার পথ খোলা থাকবে। উভয় পক্ষের স্বার্থেই সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ চায় তেহরান, ইজ়রায়েলকে সেই বার্তাও পাঠাচ্ছে ইরান।
ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হবে কি ইজ়রায়েল? ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত আক্রমণ অব্যাহত থাকবে! তিনি বলেন, “আমরা জয়ের পথে এগোচ্ছি। আমরা আমাদের দু’টি মূল লক্ষ্য পূরণের দিকে এগিয়ে চলেছি— পারমাণবিক হুমকি এবং ক্ষেপণাস্ত্র হুমকির বিনাশ করা।”
ইরান ‘পারমাণবিক শক্তিবৃদ্ধি’ চালিয়ে যাচ্ছে, এই আশঙ্কা থেকেই তাদের উপর এ বার হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েল। তাদের দাবি, ইরানের হাতে পরমাণু অস্ত্র এলে অস্তিত্বসঙ্কটে পড়বেন ইজ়রায়েলিরা। গত চার দিনের ইজ়রায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত ইরান। ইরানের বিমানবাহিনীর অনেক উচ্চপদস্থ কর্তার মৃত্যু হয়েছে। অনেকের দাবি, ইজ়রায়েলি হামলায় ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই। সংবাদমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, উত্তর-পূর্ব তেহরানে একটি বাঙ্কারে সপরিবারে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।
ইজ়রায়েলের দাবি, দুই সপ্তাহ টানা হামলার প্রস্তুতি সেরে রেখেছে তাদের সামরিক বাহিনী। তবে দুই দেশের সংঘর্ষ থামাতে উদ্যোগী হয়েছে বিশ্বের কিছু দেশ। মূলত আরব দেশগুলি মধ্যস্থতা করছে। তাদের মতে, কূটনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজে বার করা উচিত। ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-কে মধ্যস্থতাকারী এক কর্তাকে বলেছেন, ‘‘ইরানিরা জানে যে ইজ়রায়েলকে সব দিক থেকে সাহায্য করছে আমেরিকা। কিন্তু তারা গ্যারান্টি চায় যে, আমেরিকা যেন কোনও ভাবে হামলায় যোগ না দেয়।’’ সেই আশ্বাস পেলেই আলোচনার টেবিলে বসতে রাজি ইরান!