আইএস-ভূমে মৃত্যু কামনা ধর্ষিতার, কেউ কেউ সুখী

দু’টো গল্প যেন কিছুতেই মিলছে না। একটা আনন্দ-আখ্যান। যেখানে স্রেফ ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আদর্শের টানে অস্ট্রিয়ার ঘরবাড়ি ছেড়ে সিরিয়ায় চলে আসে দুই কিশোরী। সংসার পাতে। তার পর সুখে-শান্তিতে ঘরকন্না শুরু করে। অন্যটাও আইএস রাজত্বেরই গল্প। তবে এই গল্পটা ইরাকের এক তরুণীর। যিনি কাতর গলায় মানবাধিকার কর্মীদের কাছে অনুরোধ করেন, “দোহাই আপনাদের। আমাকে বোমা মারুন। আপনারা না মারলে আমিই নিজেকে মেরে দেব। এ অত্যাচার আর সহ্য হয় না।”

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ভিয়েনা শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৩৫
Share:

দু’টো গল্প যেন কিছুতেই মিলছে না।

Advertisement

একটা আনন্দ-আখ্যান। যেখানে স্রেফ ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আদর্শের টানে অস্ট্রিয়ার ঘরবাড়ি ছেড়ে সিরিয়ায় চলে আসে দুই কিশোরী। সংসার পাতে। তার পর সুখে-শান্তিতে ঘরকন্না শুরু করে। অন্যটাও আইএস রাজত্বেরই গল্প। তবে এই গল্পটা ইরাকের এক তরুণীর। যিনি কাতর গলায় মানবাধিকার কর্মীদের কাছে অনুরোধ করেন, “দোহাই আপনাদের। আমাকে বোমা মারুন। আপনারা না মারলে আমিই নিজেকে মেরে দেব। এ অত্যাচার আর সহ্য হয় না।” দিন-রাত আইএস জঙ্গিদের হাতে ধর্ষিত হতে হতে বাঁচার ইচ্ছেই হারিয়ে ফেলেছেন তরুণী। এখন তাই মৃত্যুই মুক্তি।

প্রথম দুই কিশোরীর নাম সাবিনা সেলিমোভিক ও সামরা কেসিনোভিক। বয়স পনেরো। আদতে ভিয়েনার বাসিন্দা সাবিনা ও সামরা গত এপ্রিল থেকে নিখোঁজ ছিল। কেন, কোথায়, কী ভাবে তারা হারিয়ে যায় তা নিয়ে এত দিন কোনও তথ্যই ছিল না। সম্প্রতি এক সাপ্তাহিক ফরাসি পত্রিকাকে এসএমএস করে সাবিনা। জানায় তাদের গল্প। কী ভাবে প্রথমে তুরস্ক ও তার পর পায়ে হেঁটে সীমান্ত পার হয়ে সিরিয়ায় ঢোকে তারা, কী ভাবেই বা রাকায় পৌঁছয় আর তার পর কী ভাবে দুই জঙ্গিকে বিয়ে করে। গল্পটা রোমহর্ষক। তবে তার থেকেও বেশি বিস্ময়ের। আইএস রাজত্বে নাকি ভাল আছে সাবিনা ও সামরা। কোনও কষ্ট হচ্ছে না তাদের। সাবিনার বয়ানে, “আমরা ভাল আছি। এখানে এসেছিলাম নিজেকে সমর্পণ করতে। সেটাই করছি।” তার দাবি, সিরিয়ায় খাওয়া-দাওয়া ও থাকার অসুবিধা নেই। কারণ, অস্ট্রিয়ার বাজারের মতো কর্নফ্লেক্স, কেচআপ থেকে শুরু করে সব কিছুই মেলে এ দেশে। সব মিলিয়ে তাই সুখে-শান্তিতেই চলছে সংসার। ঠিক যেমনটা চলার কথা।

Advertisement

তা হলে ইরাকের ওই তরুণী যা বলছেন তা কি করে সত্যি হয়? যে আইএস রাজত্বে সুখের সংসার তৈরি করেছে সাবিনা ও সামরা, সেখানে ওই তরুণী মৃত্যু চাইছেন কেন? এর উত্তর অবশ্য কঠিন নয়। তরুণী ধর্মে ইয়েজিদি। কিছু দিন আগে এই গোষ্ঠীকেই নিশ্চিহ্ন করবে বলে উঠে পড়ে লেগেছিল আইএস। তরুণীকে প্রাণে মারেনি তারা। শুধু ফি দিন ধর্ষণ করেছে। যখন যার ইচ্ছে, তখনই সে চড়াও হয়েছে তাঁর উপর। তরুণীর বয়ানে, “৩০ বারেরও বেশি ধর্ষিতা হয়েছি। দুপুরে খাওয়ার সময় পাই না। শৌচালয়ে যাওয়ার সময় নেই। শুধু...।” এর পরই আর্তি, “দয়া করে মার্কিন বিমানগুলোকে বলুন যৌনকর্মীদের এই আস্তানাটি খুঁজে বের করতে। আর তার পর বোমা মারুন।”

এই গল্পটা অবিশ্বাস্য নয়। কারণ আইএস যে শ’য়ে শ’য়ে ইয়েজিদি মহিলা ও শিশুদের যৌন-ক্রীতদাসে পরিণত করেছে, সে খবর আগেই জানা গিয়েছিল। শোনা গিয়েছিল বছর তেরোর এক কিশেীরার গল্প। কী ভাবে একাধিক বার তাকে ধর্ষণ করে জঙ্গিরা। সে দিক থেকে দেখলে ইয়েজিদি তরুণীর গল্প সাবিনা ও সামরাদের থেকে ঢের বেশি বিশ্বাসযোগ্য।

তাই হয়তো সাবিনার পাঠানো উত্তরগুলি পত্রিকার কর্তৃপক্ষ ক’জন মনোবিদকে দেখান। গোটা সাক্ষাৎকার পড়ার পর তাঁরা জানান, যতটা খুশি আছে বলে সাবিনা দাবি করছে, বাস্তব ততটা সুখের না-ও হতে পারে। কারণ, সাক্ষাৎকারের কিছুটা অংশ পড়ে মনোবিদদের ধারণা, সাবিনার স্বামী হয়তো তাকে বন্দুকের ডগায় রেখে ভাল ভাল কথা লিখিয়েছে।

সত্যাসত্য জানা নেই। তবে আইএস যে অস্ত্রের পাশাপাশি প্রচারকেও দরকারি অস্ত্র বলে মনে করে সে কথা এ দিন ফের স্পষ্ট হয়েছে। এ দিন তারা চিত্রসাংবাদিক জন ক্যান্টলির মিনিট পাঁচেকের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। কোবান শহরে সম্ভবত সেটি তোলা হয়েছে। কুর্দ বাহিনীর দাবি উড়িয়ে ক্যান্টলি তাতে জানিয়েছেন কোবান এখনও আইএস জঙ্গিদের দখলে।

আজ নিজামি-মামলার রায়

নিজস্ব সংবাদদাতা • ঢাকা

মুক্তিযুদ্ধের সময়ে মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আলবদর বাহিনীর প্রধান ও জামাতে ইসলামির সভাপতি মতিউর রহমান নিজামির মামলার রায় বুধবার ঘোষিত হবে। তার বিরুদ্ধে খুন ধর্ষণ সহ অন্তত ১৬টি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এর আগে অন্য একটি মামলায় মৃত্যুদণ্ডের সাজাও হয়েছে তার। নিজামির মামলার রায় ঘোষণার দিন দেশ জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন