গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
এ বার কি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের টার্গেট হতে চলেছে বাংলা মুলুক? জল্পনার কারণ, বাংলা ভাষায় লেখা একটি পোস্টার। যাতে লেখা রয়েছে, ‘‘শীঘ্রই আসছে, ইনশাল্লাহ।’’ পোস্টারটি প্রকাশ করেছে আইএস ঘনিষ্ঠ ‘টেলিগ্রাম’ নামের একটি মেসেজিং অ্যাপ।
আইএস শ্রীলঙ্কায় লাগাতার বিস্ফোরণের ঘটনার দায় নেওয়ার পরপরই, এই বাংলা পোস্ট ভারতীয় গোয়েন্দাদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। গোয়েন্দাদের প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ হয়েছিল— পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা-সহ পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বাঙালিপ্রধান রাজ্যগুলিতে অথবা বাংলাদেশে বড় রকমের হামলার কোনও ছক কষছে আইএস জঙ্গিরা। যদিও সব দিক খতিয়ে দেখার পরে, আপাতত তাঁদের ধারণা হয়েছে, বাংলাদেশের কথা মাথায় রেখেই এই পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে।
গোয়েন্দার জানাচ্ছেন, গত বৃহস্পতিবার ওই পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে আইএস ঘনিষ্ঠ ‘আল মুরসালাত’ নামের এক গোষ্ঠীর তরফে। তাতে মুরসালাতের লোগোও বসানো রয়েছে। স্থানীয় জঙ্গি সংগঠন ‘তাওহিদ জামাত’-এর মাধ্যমে আইএস সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় বড় রকমের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটানোয় এই পোস্টার যথেষ্টই উদ্বেগে রেখেছে গোয়েন্দাদের।
আরও পড়ুন- শামিমার ছেলের মৃত্যু নিয়ে বাড়ছে ধোঁয়াশা
আরও পড়ুন- শ্রীলঙ্কায় আইএস জঙ্গিদের গোপন ডেরায় হানা সেনার, ছয় শিশু-সহ হত ১৫
কলকাতার গোয়েন্দারা অবশ্য খবরাখবর নিয়ে জেনেছেন, আইএস জঙ্গিদের সাংগঠনিক টার্গেটে এখনও বড় জায়গায় রয়েছে বাংলাদেশ। সেখানকার জঙ্গি সংগঠন জেএমবি-র প্রধান তামিম চৌধুরীর মৃত্যু হওয়ার পর বাংলাদেশে আইএস নিজেদের সংগঠনকে নতুন করে ঢেলে সাজার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই পোস্টার সম্ভবত তারই ইঙ্গিত।
তবে, নতুন জঙ্গি নিয়োগ ও গোয়েন্দাদের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্য কলকাতা-সহ গোটা পশ্চিমবঙ্গ ও আশপাশের রাজ্যগুলিতে প্রায়ই আসা-যাওয়া করে জেএমবি জঙ্গিরা। গত ফেব্রুয়ারিতে তাদেরই এক জন ধরা পড়ে বাবুঘাটে। জেএমবি-র ওই জঙ্গির নাম আরিফুল ইসলাম। ২০১৮-য় বুদ্ধগয়ায় যে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল, তাতে জড়িতদের মধ্যে নাম রয়েছে আরিফুলের। গত জুলাইয়ে বর্ধমানে সিআইডি গ্রেফতার করে আইএস-জেএমবি জঙ্গি মহম্মদ মুশিরুদ্দিন ওরফে মুশাকে। যে দীর্ঘ দিন তামিলনাড়ুর তিরুপুর জেলায় গা ঢাকা দিয়ে ছিল। জেরায় মুশা জানিয়েছিল, ২০১৪-য় গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত জেএমবি জঙ্গি আমজাদ শেখের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল।
তবে রাজ্য বা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা এখনও ‘এটা শুধুই বাংলাদেশের ব্যাপার’ ধরে নিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকছেন এমন নয়। বরং এর বৃহত্তর কোনও গুরুত্ব আছে কি না, তা খুঁজে দেখা হচ্ছে। তা ছাড়া, বাংলাদেশে কোনও সন্ত্রাসবাদী তত্পরতা বাড়লে, সেটাও প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের যথেষ্টই উদ্বেগের কারণ।