ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। —ফাইল চিত্র।
ইরানের হাতে যে এখনও পর্যন্ত কোনও পরমাণু অস্ত্র নেই, তা একপ্রকার মেনে নিলেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি রবিবার নিজে পরিদর্শন করেন ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই তিনি বলেন, “ভাবুন যদি ইরানের হাতে পরমাণু বোমা থাকত, তবে কী হতে পারত!”
আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ ভেঙে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালানোর অভিযোগ উঠেছে ইরানের বিরুদ্ধে। তবে ইরান যে এখনও কোনও পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে উঠতে পারেনি, তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। একই কথা বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র রিপোর্টেও।
সাধারণ ভাবে পরমাণু বোমা তৈরি করতে গেলে ৯০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম প্রয়োজন। তবে ৪২ কিলোগ্রাম ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে কম ক্ষমতাসম্পন্ন পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব। বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইরান প্রায় ২৭৫ কিলোগ্রাম ৬০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম তৈরির কাজে সফল হয়েছে। আর এই নিয়েই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। যদিও ইরানের দাবি বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং অন্যান্য শান্তিপূর্ণ কর্মকাণ্ডের জন্যই তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি চলছে।
এরই মধ্যে গত শুক্রবার থেকে ইরানের পরমাণুকেন্দ্র-সহ বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইজ়রায়েলি সেনা। পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইরানও। দু’পক্ষই একে অন্যের উপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তেল আভিভের দক্ষিণে বাত ইয়াম শহরেও আছড়ে পড়েছে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র। ওই হামলায় দুই শিশু-সহ ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি ইজ়রায়েলের।
রবিবার সেই শহরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা আজ এখানে দাঁড়িয়ে আছি, কারণ আমরা একটি অস্তিত্বের জন্য লড়ছি। এটি আজ প্রত্যেক ইজ়রায়েলির কাছে স্পষ্ট। ভাবুন তো, যদি ইজ়রায়েলের শহরগুলিতে হামলার জন্য ইরানের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র থাকত, তা হলে কী হতে পারত! ভাবুন, যদি ইরানের কাছে এমন ২০,০০০টি ক্ষেপণাস্ত্র থাকে, তা হলে কী হতে পারে।” তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইজ়রায়েলের সাধারণ নাগরিকদের হত্যার মাসুল গুণতে হবে ইরানকে। ইজ়রায়েলি ভূখণ্ডে হামলা করে ইরানের উপরে আরও জোরালো প্রত্যাঘাত করা হবে বলেও হুঙ্কার দিয়েছেন নেতানিয়াহু।