গাজ়া শহরে ইজ়রায়েলি বাহিনীর ট্যাঙ্ক। —ফাইল চিত্র।
গাজ়া শহর খালি করে দেওয়ার জন্য ফের হুঁশিয়ারি দিল ইজ়রায়েল। সাধারণ প্যালেস্টাইনিদের গাজ়া শহর ছেড়ে ভূখণ্ডের দক্ষিণ প্রান্তে সরে যাওয়ার জন্য ‘শেষ সুযোগ’ দিল ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর প্রশাসন। এর পরেও যাঁরা গাজ়া শহরে থেকে যাবেন, তাঁদের জঙ্গি এবং সন্ত্রাসের সমর্থক বলে ধরে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে তেল আভিভ।
প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে ইজ়রায়েলের ধারাবাহিক হামলায় করুণ পরিণতি হয়েছে সাধারণ গাজ়াবাসীদের। আকাশপথে তো হামলা চলছিলই, গত প্রায় এক মাস ধরে গাজ়া শহরে স্থলপথেও প্রবেশ করতে শুরু করেছে ইজ়রায়েলি সেনা। গাজ়া ভূখণ্ডে প্রায় দু’বছর ধরে চলতে থাকা এই সংঘর্ষ বন্ধ করতে উদ্যত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। শান্তি সমঝোতায় রাজি হওয়ার জন্য হামাসকে হুমকিও দিয়ে রেখেছেন তিনি। এ অবস্থায় গাজ়া শহরকে আরও বেশি করে ঘিরতে শুরু করেছে ইজ়রায়েলি বাহিনী।
ইজ়রায়েলের দাবি, গাজ়া শহর থেকেই হামাস গোষ্ঠী নিজেদের কার্যকলাপের একটি বড় অংশ পরিচালনা করে। সেই কারণেই হামাসকে নির্মূল করতে গাজ়া শহরে স্থলপথেও অভিযান শুরু করেছে তারা। এ অবস্থায় বুধবার ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজ়রায়েল কাট্জ় সমাজমাধ্যম পোস্টে গাজ়া শহর ছাড়ার জন্য ‘শেষ সুযোগ’ দিলেন প্যালেস্টাইনিদের। তিনি লেখেন, ‘যাঁরা গাজ়া শহর ছেড়ে দক্ষিণের দিকে পালাতে চান, তাঁদের কাছে এটাই শেষ সুযোগ। তাঁরা গাজ়া শহর ছেড়ে চলে গেলে সেখানে শুধু হামাস গোষ্ঠীর সদস্যেরাই থেকে যাবে।’ এর পরে প্যালেস্টাইনিদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি আরও লেখেন, ‘‘এর পরেও যাঁরা গাজ়া শহরে থেকে যাবেন, তাঁদের জঙ্গি এবং সন্ত্রাসের সমর্থক বলে ধরে নেওয়া হবে।’’
বস্তুত, গাজ়ায় বসবাসকারী সাধারণ প্যালেস্টাইনিদের গত বেশ কয়েক দিন ধরেই শহর ছেড়ে ভূখণ্ডের দক্ষিণের প্রান্তে চলে যেতে বলছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। অনেকেই শহর ছেড়ে দক্ষিণ প্রান্তে পালাতে শুরু করেছেন। কিন্তু অনেকেই অভিযোগ তুলছেন, গাজ়ার দক্ষিণ প্রান্তে ইতিমধ্যে প্রচুর মানুষের ভিড় হয়ে গিয়েছে। তা ছাড়া যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়ায় পরিবহণের জন্য খরচও অত্যধিক। সেই কারণে অনেকেই চাইলেও গাজ়া শহর ছেড়ে বেরোতে পারছেন না।
সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, গাজ়ায় প্যালেস্টাইনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছে ইজ়রায়েল। ইজ়রায়েল সরকারের কর্তাব্যক্তিরাই এই গণহত্যায় ইন্ধন দিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে ৭২ পাতার ওই রিপোর্টে।