জঙ্গিদের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি চলছে পেশওয়ারের চরসাড্ডায়। ছবি: এএফপি।
পঠানকোটে যে পদ্ধতিতে হামলা করেছিল পাকিস্তান থেকে আসা জঙ্গিরা, ঠিক সেই পদ্ধতিতেই আক্রান্ত পাকিস্তান। পাক সেনাবাহিনীর বিবৃতিই সে কথা বলছে। সেনা মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রতিবেশী দেশের মোবাইল নিয়ে পেশওয়ারে ঢুকেছিল জঙ্গিরা। হামলা চলাকালীন এই নাশকতার মূল চক্রীদের সঙ্গে জঙ্গিরা মোবাইল থেকে কথাও বলছিল।
বাচা খান ইউনিভার্সিটিতে গোলাগুলির লড়াই থেমেছে। কিন্তু পেশওয়ারে পাক সেনার জঙ্গি বিরোধী অভিযান এখনও শেষ হয়নি। চরসাড্ডা এলাকায় পাক সেনা এখন চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে। কোনও জঙ্গি এলাকায় এখনও লুকিয়ে রয়েছে বলে সেনার আশঙ্কা। তাই এই অভিযান। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তেহরিক-ই-তালিবান এর গিদর গোষ্ঠীর চালানো হামলা সম্পর্কে যে সব নতুন তথ্য সামনে এসেছে, তা বেশ চাঞ্চল্যকর। পাক সেনার মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম বাজওয়া জানিয়েছেন, বাচা খান ইউনিভার্সিটিতে যে জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছে, তাদের মোবাইলে আফগানিস্তানের সিম কার্ড ছিল। তারা হামলার সময় ফোনে এই নাশকতার মূল চক্রীদের সঙ্গে কথাও বলছিল। এই চক্রীরা সকলেই আফগানিস্তানে রয়েছে।
আরও পড়ুন:
পশ্চিম এশিয়ার আকাশে মুখোমুখি মোকাবিলায় চিন আর ভারতের বায়ুসেনা
জঙ্গিদের এই কার্যকলাপ খুবই চেনা। পঠানকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার স্মৃতি এখনও টাটকা। সেখানেও তো ঠিক এই ঘটনাই ঘটেছে। পঠানকোটে পাকিস্তান থেকে আসা জঙ্গিদের সঙ্গে যে সব মোবাইল ছিল, সেগুলিতেও পাকিস্তানের সিম ছিল। সেই ফোন থেকে তারা পাকিস্তানে ফোন করে কথা বলেছিল। গুরুদাসপুরের পুলিশ সুপারের কাছ তেকে ছিনতাই করা মোবাইল থেকেও একাধিকবার পাকিস্তানে ফোন করে জঙ্গিরা। ফোন ট্যাপ করে ভারতীয় গোয়েন্দারা জানতে পেরেছিলেন, হামলার মূল চক্রীদের সঙ্গেই ফোন করে কথা বলছে জঙ্গিরা।
এর থেকে স্পষ্ট, ভারতের পঠানকোটে জঙ্গি হামলার ছক যেমন প্রতিবেশী পাকিস্তান থেকেই কষা হয়েছিল, পাকিস্তানে হওয়া হামলার ছকও সেই একই ভাবে তার আর এক প্রতিবেশী আফগানিস্তানের কষা হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহল বলছেন, পঠানকোটের ঘটনার পর পরই প্রায় একই ধাঁচে পেশওয়ারে হামলা হওয়ায়, পাকিস্তানের বড় শিক্ষা নেওয়া উচিত। নিজের দেশের মাটি প্রতিবেশী দেশে নাশকতার জন্য ব্যবহৃত হতে দিলে যে সেই একই অস্ত্রে নিজেদেরও ঘায়েল হতে পারে, তা বুঝে নেওয়া উচিত পাকিস্তানের। মত প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের।