বাংলাদেশের বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়ে তবেই বাড়ি ফিরবেন তিনি। কিন্তু তার আগেই নিজের রাজনৈতিক দফতরের স্বেচ্ছাবাস কাটিয়ে রবিবার বা়ড়ি ফিরলেন খালেদা, দুর্ন়ীতির মামলায় বিশেষ আদালত থেকে জামিন নিয়ে।
আজ সকালে অতিরিক্ত পুলিশি প্রহরার মধ্যে খালেদাকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এবং জিয়া চ্যারিটেবল নামক দু’টি আলাদা দুর্নীতির মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান খালেদা। তার পরই দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ গুলশান অ্যাভিনিউয়ে নিজের বাড়িতে পৌঁছন তিনি। তাঁর আইনজীবী বলেছেন, অসুস্থতার কারণে এর আগে শুনানির সময় হাজির থাকতে পারেননি খালেদা। তিনি আরও জানান ৫ মে আবার আদালতে হাজির হবেন তাঁর মক্কেল।
এই ঘটনাটিকে হাসিনা সরকারের বড় চমক হিসেবেই দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশের বর্তমান অস্থির পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসিনা সরকার ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিনটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন ঘোষণা করেন। আর তাতেই নিজের অবস্থান বদলান খালেদা। আগে তিনি ঘোষণা করেছিলেন সাধারণ নির্বাচনের আগে অন্য কোনও ভোটে অংশ নেবে না তাঁর দল। এই সরকারকে অবৈধ বলেও ঘোষণা করেছিলেন তিনি। কিন্তু এখন পুরনো অবস্থান থেকে সরে এসে ৩টি শহরের ভোটেই খালেদার প্রার্থীরা লড়তে নেমেছেন।
চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি রাতে নিজের বাড়ি থেকে গুলশনের ৮৬ নম্বর সড়কে রাজনৈতিক দফতরে যান খালেদা জিয়া। সে দিন রাতে নিরাপত্তার কথা বলে তাঁকে দফতর থেকে বেরোনোর অনুমতি দেওয়া হয়নি। টানা ৯২ দিন এ দফতরেই অবস্থান করেন তিনি। গত ৫ জানুয়ারি থেকে দেশে লাগাতার আবরোধ এবং ফেব্রুয়ারি থেকে শুক্রবার ও শনিবার বাদ দিয়ে সপ্তাহের অন্য দিন হরতাল ডাকায় অস্থির হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। গত তিন মাসে বিএনপি ও তার শরিক জামাতে ইসলামির কর্মীদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় পুড়ে মৃত্যু হয়েছে দু’শোর বেশি মানুষের। জখম হয়েছেন হাজারখানেক। এমনকী তাঁর ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো অকালে মারা যাওয়ার পরেও দফতর থেকে বেরোননি খালেদা। বলেছিলেন, হাসিনা সরকারকে ক্ষমতাচ্যূত করেই তিনি ঘরে ফিরবেন। আজ অবশ্য তিনি ঘরে ফিরেছেন। হাসিনা সরকারও বহাল রয়েছে ঢাকায়।