পাদ্রি টম উঝুন্নালিল
অপহৃত হওয়ার ১৮ মাস বাদে ইয়েমেনের আইএস জঙ্গিদের হাত থেকে উদ্ধার করা হলো ভারতীয় পাদ্রি টম উঝুন্নালিলকে। এক বছর আগে ইয়েমেনের আদেনে মিশনারিজ অব চ্যারিটির একটি বৃদ্ধাশ্রমে হামলা চালিয়ে কেরলের ওই ফাদারকে অপহরণ করে জঙ্গিরা। মঙ্গলবার তাঁর উদ্ধারের খবর জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
এ দিন সুষমা টুইট করেছেন, ‘‘অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি ফাদার উঝুন্নালিলকে উদ্ধার করা হয়েছে।’’ বিদেশমন্ত্রক সূত্রের খবর, ওমান সরকারের মধ্যস্থতায় উদ্ধার হয়েছেন বছর পঞ্চাশের ওই ফাদার। ইয়েমেন থেকে আজই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মাস্কাটে। সেখান থেকে বিমানে কেরল ফিরে যাওয়ার কথা তাঁর। ওমান সরকার একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘‘সুলতান কাবুস বিন সৈয়দের (ওমানের সুলতান) নির্দেশে ইয়েমেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভ্যাটিকানের এক কর্মীকে উদ্ধার করেছি। আজ সকালে মাস্কাট পাঠানো হয়েছে তাঁকে। সেখান থেকে ভারতে নিজের বাড়ি ফিরে যাবেন তিনি।’’
২০১০ সালে মিশনারিজ অব চ্যারিটি থেকে আদেনের এক বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানো হয় কেরলের কোট্টায়াম জেলার বাসিন্দা ফাদার টমকে। পাঁচ বছর বাদে তাঁর কাজের সময়সীমা ফুরিয়ে গেলেও অন্য কেউ দায়িত্ব নেওয়ার আগে পর্যন্ত চার্চের নির্দেশে ইয়েমেনেই থেকে যান তিনি। ২০১৬-র ৪ মার্চ ওই বৃদ্ধাশ্রমে হানা দিয়ে চার সন্ন্যাসিনী-সহ ১৬ জনকে হত্যা করে আইএস। অপহরণ করে নিয়ে যায় এই ক্যাথলিক যাজককে। এর কিছু দিনের মধ্যেই শোনা যায়, ফাদার টমকে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যার হুমকি দিয়েছে অপহরণকারীরা। যদিও পরে ক্যাথলিক সংগঠন ‘দ্য ক্যাথলিক বিশপস কনফারেন্স অব ইন্ডিয়া জানায়, এই খবর ভুয়ো। ফাদারের মুক্তির জন্য অপহরণকারীদের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেয় ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
আরও পড়ুন:রোহিঙ্গা প্রশ্নে ফের সঙ্কটে মোদী সরকার
গত ডিসেম্বরে আইএস ডেরা থেকে তাঁকে বাঁচানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও পোপ ফ্রান্সিসের কাছে একটি ভিডিও মারফত আবেদন জানান ফাদার টম। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘ইউরোপীয় যাজক হলে আমায় আগেই উদ্ধারের চেষ্টা করা হতো। ভারতীয় বলেই আমায় গুরুত্ব দিচ্ছে না ভ্যাটিকান।’’ চলতি বছর মে-মাসে ফের একটি ভিডিওয় উদ্ধারের আর্জি জানান ফাদার। বলেন, ‘‘আমার শরীর খারাপ। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া দরকার। দয়া করে আমায় সাহায্য করুন।’’ আজ ফাদার টম উঝুন্নালিলের একটি ছবি প্রকাশ করেছে ওমানের সংবাদমাধ্যম। স্থানীয় পোশাক পরে সুলতান কাবুসের ছবির সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি। সাদা লম্বা দাড়ি-গোঁফে মুখ ঢাকা। এক বছরে চেহারাও ভেঙে গিয়েছে অনেকটাই। জঙ্গি ডেরা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আজ পরিবার-বন্ধু ও ক্যাথলিক ভাই-বোনদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই যাজক।