political

কুলভূষণ মামলায় পরাজয় হয়নি, দাবি পাকিস্তানের

আন্তর্জাতিক আদালতে কুলভূষণ যাদব মামলায় পাকিস্তানের পরাজয় হয়েছে, এ কথা বলা উচিত নয়। এমনটাই দাবি করল পাকিস্তান। শনিবার পাক বিদেশ দফতরের উপদেষ্টা সরতাজ আজিজের আরও দাবি, কুলভূষণ যাদবকে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে দেখা করা নিয়ে কোনও নির্দেশই দেয়নি আন্তর্জাতিক আদালত।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ১৪:৪১
Share:

সরতাজ আজিজ। ছবি:সংগৃহীত।

আন্তর্জাতিক আদালতে কুলভূষণ যাদব মামলায় পাকিস্তানের পরাজয় হয়েছে, এ কথা বলা উচিত নয়। এমনটাই দাবি করল পাকিস্তান। শনিবার পাক বিদেশ দফতরের উপদেষ্টা সরতাজ আজিজের আরও দাবি, কুলভূষণ যাদবকে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে দেখা করা নিয়ে কোনও নির্দেশই দেয়নি আন্তর্জাতিক আদালত।

Advertisement

কুলভূষণ মামলায় একে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় বিপক্ষে গিয়েছে। অন্য দিকে, নিজের দেশেই বিরোধী দল, আইনজীবী এবং সর্বোপরি সংবাদমাধ্যমের সমালোচনায় চাপে পাকিস্তান। ভারতীয় নৌসেনার প্রাক্তন আধিকারিক কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদণ্ডে স্থগিতাদেশের পর শনিবার ইসলামাবাদ জানিয়েছিল, আন্তর্জাতিক আদালতে এই মামলা নতুন করে সাজাতে আরও শক্তিশালী আইনজীবীদের দল গঠন করা হবে। আরও এক ধাপ সুর চড়িয়ে সরতাজ আজিজ জানান, ভিয়েনা কনভেনশনের যে শর্তের কথা আন্তর্জাতিক আদালতে তুলে ধরা হয়েছিল তা যথাযথ নয়। কুলভূষণ যাদবকে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা থেকে বঞ্চিত করেছে পাকিস্তান, এই কথা একেবারেই সত্য নয়। কারণ হিসেবে তিনি জানান যে, কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদণ্ডে স্থগিতাদেশ জারি করলেও কনসুলার অ্যাকসেস নিয়ে পাকিস্তানকে কোনও নির্দেশই আন্তর্জাতিক আদালতের তরফ থেকে দেওয়া হয়নি। আন্তর্জাতিক আদালতের পর্যবেক্ষণকে এ ক্ষেত্রে বিকৃত করা হচ্ছে বলেই তাঁর অভিমত।

শনিবার দ্য হেগ-এর আন্তর্জাতিক আদালত পাক জেলে বন্দি ভারতীয় কুলভূষণ যাদবের ফাঁসির আদেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। পাকিস্তানের সওয়ালকে কার্যত উড়িয়ে দেয় এই আদালত। রায় ঘোষণা করে জানিয়ে দিয়েছে যে, এই মামলা আন্তর্জাতিক আদালতের এক্তিয়ারভুক্ত। অর্থাৎ ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ীই কুলভূষণ যাদবের মামলায় আন্তর্জাতিক আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে বলেই জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জাস্টিস রনি আব্রাহাম। আদালতের পর্যবেক্ষণ, কুলভূষণ যাদবকে কনস্যুলার অ্যাকসেস (দেখা করার অনুমতি) থেকে বঞ্চিত করেছে পাকিস্তান। কারণ, ভিয়েনা কনভেনশনের শর্ত অনুযায়ী কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করার অধিকার রয়েছে ভারতীয় দূতাবাসের। ঠিক কোন পরিস্থিতিতে কূলভূষণকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তা আন্তর্জাতিক আদালতের কাছেও স্পষ্ট নয়। তাই যত দিন মামলার শুনানি চলবে তত দিন পর্যন্ত কুলভূষণের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ না করারই নির্দেশ দেয় আন্তর্জাতিক আদালত।

Advertisement

আদালতের এই রায় ঘোষণার পরে নিজের দেশেই ব্যাকফুটে চলে যায় পাক সরকার। সওয়াল ওঠে, আন্তর্জাতিক আদালতে পাকিস্তানের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করা আইনজীবী খাওয়ার কুরেশির বিরুদ্ধেও। লন্ডনপ্রবাসী পাক আইনজীবী রশিদ আসলাম জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা আন্তর্জাতিক আদালতে ঠিক মতো সওয়ালই করতে পারেননি। তাঁর দাবি, সওয়াল করার জন্য পাকিস্তানকে যে ৯০ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছিল তার মধ্যে ৪০ মিনিটই নষ্ট করেছে। তবে প্রথম থেকেই কুরেশির প্রশংসা করে গিয়েছেন আজিজ। তিনি বলেন, “সর্বসম্মতিক্রমেই কুরেশিকে আইনজীবী হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। তাঁর সওয়ালে সকলে খুশি। তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, আমাদের যে ৯০ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছিল তার মধ্যে মাত্র ৫০ মিনিট সময়ই সওয়ালের জন্য রাখা হয়— মোদ্দা কথা হল যে কোনও জোরালো যুক্তি খাড়া করতে কিন্তু ১০ মিনিট সময়ই যথেষ্ট।”

আরও পড়ুন: কসাবের থেকে দশ গুণ বেশি অপরাধী কূলভূষণ, প্রতিক্রিয়া মুশারফের

‘কুলভূষণ মামলায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়বে পাক সরকার, সেনা’

আন্তর্জাতিক আদালতের এই রায়ের ফলে পাকিস্তানের যে পরাজয় স্বীকার করছে না, তা আরও এক বার স্পষ্ট করে দিয়েছেন আজিজ। তা ছাড়া, এই রায়ের সঙ্গে যে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিও জড়িত রয়েছে তা-ও উল্লেখ করেন তিনি। কুলভূষণ যাদব যে চরবৃত্তি করতেই পাকিস্তানে ঢুকেছিলেন, তার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ আন্তর্জাতিক আদালতে পেশ করা হবে বলেও দাবি করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন