প্রেসিডেন্ট পার্ক। —ফাইল চিত্র।
জল্পনা ছিলই। দুর্নীতির অভিযোগে শেষ পর্যন্ত ইমপিচ করা হল দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গেউন হয়ে-কে। শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় সংসদে ভোটাভুটিতে ২৩৪টি ভোট প্রেসিডেন্ট পার্ককে ইমপিচের পক্ষে পড়ে। বিপক্ষে যায় ৫৬টি ভোট। ছ’জন অনুপস্থিত ছিলেন। ইমপিচের পক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পড়ায় প্রেসিডেন্ট পার্ককে আপাতত ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হচ্ছে। জাতীয় সংসদের স্পিকার চুং সয়ে-কিউন প্রেসিডেন্টের ইমপিচের খবর দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাস্তায় জনতার ঢল নামে। পাশাপাশি সঙ্কটের এই পরিস্থিতিতে স্পিকার সাংসদদের সতর্ক থাকতে বলেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার সংবিধানের নিয়মানুসারে সংসদীয় আদালতে এ বার ইমপিচের অভিযোগগুলি নিয়ে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রক্রিয়াটি ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। এই সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী হওয়াং কইও-অহন প্রেসিডেন্টের কাজকর্ম সামলাবেন।
বেশ কয়েক দিন ধরেই প্রেসিডেন্ট পার্কের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে প্রবল বিক্ষোভ চলছিল দক্ষিণ কোরিয়া জুড়ে। অভিযোগ উঠেছিল, প্রেসিডেন্ট পার্ক এর ঘনিষ্ঠ সহযোগী চোই সোন-সিল সরকারের সব গোপন তথ্য ব্যবহার করে বিভিন্ন সংগঠনকে ব্ল্যাকমেল করেছেন। যার মধ্যে স্যামসুঙের মতো প্রতিষ্ঠানও আছে। সেই সূত্রে প্রাপ্ত অর্থ ডোনেশন হিসেবে চোই-এর নানা সংগঠনের তহবিলে জমা পড়েছে। এ ছাড়া পার্কের অন্য দুই প্রাক্তন সহযোগীও ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন।
তবে ইমপিচ হওয়ার অর্থ এই নয় যে প্রেসিডেন্ট পার্ক আর ক্ষমতায় ফিরতে পারবেন না। এর আগে ২০০৪-এ প্রেসিডেন্ট রোহ মো-হউন কেও ইমপিচ করেছিল জাতীয় সংসদ। দু’মাস তিনি ক্ষমতার বাইরে ছিলেন। এর পরে ন’সদস্যের সংসদীয় আদালতে তাঁর বিচার হয়েছিল। বিচারকদের দুই-তৃতীয়াংশ রোহ মো-হউনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করে দেন। কিন্তু সংসদীয় আদালতও শেষ পর্যন্ত ইমপিচের পক্ষে রায় দিলে ১৮০ দিনের মধ্যে নতুন করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে হবে।
এই জটিল পরিস্থিতিতে উত্তর কোরিয়া নিয়ে শঙ্কা দানা বেঁধেছে দক্ষিণে। এই টালমাটাল অবস্থায় উত্তর কোরিয়া কিছু করে বসবে না তো? শঙ্কা রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রশাসনের মধ্যেই। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হান মিন-কোও একই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এই সুযোগে উত্তর কোরিয়ার সমস্যা বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা করতে পারে। হান তাই দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।