পাকিস্তানের ভাবী সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া।
পাক সেনাপ্রধানের জায়গায় নতুন মুখ। আগামী মঙ্গলবার পাক সেনাপ্রধান রাহিল শরিফের আসনে বসতে চলেছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া। এই খবর জানার পরে ভারতের প্রশ্ন একটাই, দু’দেশের সম্পর্কের সমীকরণ আরও জটিল হবে কি?
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সেটা এখনই হয়তো বলার সময় আসেনি। তবে রাহিলের জায়গায় বাজওয়া এলেই রাতারাতি সব পাল্টে যাবে, এমনটা ভাবাও ভুল।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক শীর্ষস্থানীয় অফিসার বলছেন, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সব জটিলতা, অভিযানের রকমসকম বেশ ভাল ভাবেই জানা রয়েছে জেনারেল বাজওয়ার। তবে দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই এক জন যে ভূমিকা পালন করবেন, তা দিয়ে তাঁকে বিচার করলে ভুল হবে। কারণ পারভেজ মুশারফ এবং আশফাক কায়ানি— দুই সেনাপ্রধানকেই প্রাথমিক ভাবে যেমনটা মনে হয়েছিল, তার থেকে তাঁরা অনেকটাই ভিন্ন পথে হেঁটেছেন।
ভারতের প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল বিক্রম সিংহের অধীনে এক সময় কাজ করেছিলেন ভাবী পাক সেনাপ্রধান বাজওয়া। ২০০৭ সালে কঙ্গোয় গৃহযুদ্ধ থামানোর জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তি-অভিযানে যোগ দিতে হয়েছিল বিক্রম সিংহকে। সেই সময়ে তাঁর অধীনে ব্রিগেড কম্যান্ডার হিসেবে কাজ করেছিলেন বাজওয়া।
সেই অভিজ্ঞতা থেকে বিক্রম সিংহ বলছেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের অভিযানে অসম্ভব দক্ষতার পরিচয় দিয়েছিলেন বাজওয়া। কিন্তু আন্তর্জাতিক পরিবেশে এক জন সেনা অফিসার যে ভাবে কাজ করেন, নিজের দেশের সেনাপ্রধান হওয়ার পরে তাঁর ভূমিকা বদলাবে, এটাই স্বাভাবিক। দেশের স্বার্থই দেখতে হবে তাঁকে।’’
তাই বিক্রম সিংহ মনে করছেন, ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের যে নীতি, তা ভাল ভাবেই জানেন বাজওয়া। কাশ্মীর নিয়ে উত্তাপ কমানোর দিকে বাজওয়া নজর দেবেন, এমন ভাবারও কোনও কারণ নেই— জানাচ্ছেন ভারতের প্রাক্তন সেনাপ্রধান।
শাসক হিসেবে বিভিন্ন সময়ে ছ’জন সেনাপ্রধানকে বেছে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। ১৯৯৮ সালে তিনি বেছে নেন পারভেজ মুশারফকে। পরের বছরই যিনি শরিফকে সরিয়ে তখ্তে বসে যান। পরবর্তী কালে ২০১৩ সালে নওয়াজ শরিফের পছন্দ ছিল রাহিল শরিফকে। কিন্তু তাঁর সঙ্গেও খুব একটা ভাল সম্পর্ক ছিল না প্রধানমন্ত্রীর। নয়া সেনাপ্রধানের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শরিফের সম্পর্ক কোন পথে এগোয়, সেটাই দেখার।