ওয়াল-লিখন: প্রাচীরে অনড় ট্রাম্পকে নিয়ে মিম ভারতেও।
আশঙ্কা ছিলই। তবে প্রেসিডেন্ট নয়, ঘোষণাটা করলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ রিপাবলিকান সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম। এক টুইটেই কাল হইচই ফেলে দিয়েছিলেন— ‘‘এইমাত্র দেশে জরুরি অবস্থা জারি করলেন মিস্টার প্রেসি়ডেন্ট।’’ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তখনও হোয়াইট হাউসে। ওই মেক্সিকো সীমান্তের প্রাচীর নিয়েই বৈঠক করছিলেন। সাংবাদিকদের মধ্যেও গুঞ্জন ছড়িয়েছে দেখে মুখ খুললেন ট্রাম্প। বললেন, ‘‘না, না তাড়াহুড়ো করে এখনই ও’সব করছি না।’’
খানিকটা যেন সুর নরমও শোনাল প্রেসিডেন্টের। কিন্তু তাতেই বা কী? আজ তাঁর প্রশাসন শাটডাউনের রেকর্ড গড়ে ফেলল যে! টানা ২২ দিন পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে রইল গোটা দেশ। কাল, শুক্রবারও বেতনের চেক অধরা থেকে গেল এফবিআই এজেন্ট থেকে শুরু করে, ট্রাফিক পুলিশ, জাদুঘরের কর্মী-সহ প্রায় ৮ লক্ষ ফেডারেল সরকারি কর্মচারীর। শেষ বার এমনটা হয়েছিল ১৯৯৫-’৯৬-এ। বিল ক্লিন্টন জমানায় টানা ২১ দিন শাটডাউন দেখেছিল আমেরিকা।
মেক্সিকো বলে দিয়েছে, প্রাচীরের জন্য তারা কানাকড়িও দেবে না। ট্রাম্প তাই মার্কিন কোষাগার থেকেই ৫৭০ কোটি ডলার আদায়ে মরিয়া। না হলে তাঁর হুঁশিয়ারি, জারি থাকবে শাটডাউন। প্রাচীরে বরাদ্দ নিয়ে গোড়া থেকেই বেঁকে বসেছেন ডেমোক্র্যাটরা। কংগ্রেসকে এড়াতে প্রেসিডেন্ট তাই গত কয়েক দিনে বারবার জরুরি অবস্থা ঘোষণার হুমকি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার টেক্সাসে গিয়েও তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘কথায় কাজ না হলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতেই হবে। আমার সে ক্ষমতা আছে।’’
তা হলে পিছু হটলেন কেন? সূত্রের খবর, এ নিয়ে আইনি বাধার আশঙ্কাতেই আপাতত ব্যাকফুটে প্রেসিডেন্ট। তবে প্রেসিডেন্ট ফের ধুয়ো তুলতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকে। তাঁদের মতে, প্রাচীর বিষয়টা এখন ট্রাম্পের কাছে রাজনৈতিক ইগোর লড়াই হয়ে উঠেছে। হোয়াইট হাউসে আসার আগে থেকেই নিজের ‘ডিল-মেকার’ ভাবমূর্তি নিয়ে একাধিকবার ঢাক পেটাতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। প্রেসিডেন্ট মুখে বলছেন, জাতীয় নিরাপত্তার খাতিরে দেওয়াল তোলাটা জরুরি। অবৈধ অভিবাসী মানেই তাঁর চোখে অপরাধী। যদিও সাম্প্রতিক কয়েকটি রিপোর্ট বলছে— অপরাধের পাল্লা ভারী মার্কিন নাগরিকদেরই।
ট্রাম্পের দাবি, শরণার্থীদের ভিড়ে মাদক পাচার মাত্রা ছাড়িয়েছে। অথচ ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের রিপোর্ট বলছে, সব চেয়ে বেশি পাচার হয় কড়া নিরাপত্তায় মোড়া সীমান্ত দিয়ে। তা হলে প্রাচীর তুলে কী লাভ? ডেমোক্র্যাটরা বলছেন, এতে শুধু অর্থধ্বংসই হবে। এ দিকে, কানাডা আজ ঘোষণা করেছে— আগামী তিন বছরে ১০ লক্ষেরও বেশি নতুন অভিবাসীকে আশ্রয় দেবে তারা।