আমেরিকার মিনেসোটায় চলছে প্রতিবাদ। ছবি: রয়টার্স।
সামনেই আমেরিকার সেনার ২৫০তম বর্ষপূর্তি। সেই উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মহড়া চলছে কুচকাওয়াজের। আগামী শনিবার ট্রাম্পের জন্মদিন উপলক্ষেও হবে কুচকাওয়াজ। ওই দিন কোনও বিক্ষোভ দেখানো হল তা কড়া হাতে দমন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প জানালেন, লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে এখনও সরছে না ন্যাশনাল গার্ড। যত ক্ষণ সেখানে ‘বিপদ’ থাকবে, তত ক্ষণ থাকবে বাহিনী। প্রতিবাদীরা বাহিনী সরানোর দাবি তুলেছেন। প্রেসিডেন্ট সেই দাবি এক প্রকার উড়িয়ে দিয়েছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে সোমবার রাতেও (স্থানীয় সময় অনুসারে) পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। লস অ্যাঞ্জেলেস শহরতলি লিট্ল টোকিয়োতে বেশ কয়েক জন বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ। ‘সিএনএন’ জানিয়েছে, পুলিশকে লক্ষ্য করে আতশবাজির মতো কিছু বস্তু ছুড়ছিলেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে রবার বুলেট ছোড়ে পুলিশও।
আমেরিকার অভিবাসন এবং শুল্ক দফতরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ লস অ্যাঞ্জেলেসের বাইরে অন্য শহরগুলিতেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। ক্যালিফর্নিয়া প্রদেশেরই দুই শহর সান ফ্রান্সিসকো এবং স্যান্টা আনাতেও বিক্ষিপ্ত কিছু বিক্ষোভ দেখা দিতে শুরু করেছে। বিক্ষোভ ছড়িয়েছে নিউ ইয়র্কেও। সোমবার নিউ ইয়র্কে অভিবাসন নীতি বিরোধী বিক্ষোভের জেরে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। তাঁরা সরকারি অফিসের সামনে গাড়ি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ। সংবাদমাধ্যম ‘সিএনএন’ জানিয়েছে, জর্জিয়া প্রদেশের অ্যাটলান্টা, টেক্সাসের ডালাস এবং কেন্টাকি প্রদেশেও একই ধরনের বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের বর্ডার জ়ার টম হুমান শনিবারই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ক্যালিফর্নিয়ার গভর্নর নিউসাম হোন বা লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস, বা অন্য কেউ— যিনিই অভিবাসন সংস্থার কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবেন, তাঁকে গ্রেফতার করা হবে। সোমবার ট্রাম্পের মুখেও সেই হুঁশিয়ারিই শোনা গিয়েছে। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “আমি যদি টমের জায়গায় থাকতাম, আমিও তা-ই করতাম। আমার মনে হয়, এটাই ভাল। গাভিন প্রচারে থাকতে চান। আমার মনে হয় এটা ভালই হবে।”
পরিস্থিতি সামলাতে আগেই ২০০০ ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। এ বার ক্যালিফর্নিয়ার ওই শহরে আরও ২০০০ ন্যাশনাল গার্ড পাঠাচ্ছেন তিনি। আমেরিকার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, সাময়িক ভাবে মেরিনবাহিনীর প্রায় ৭০০ সদস্যকে লস অ্যাঞ্জেলেসে মোতায়েন করা হচ্ছে। যত ক্ষণ পর্যন্ত ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যেরা লস অ্যাঞ্জেলেসে না পৌঁছোচ্ছেন, তত ক্ষণ মেরিনবাহিনীকে শহরে মোতায়েন রাখা হবে।
ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ক্যালিফর্নিয়ার প্রশাসন। উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের দিকেই আঙুল তুলেছেন নিউসাম। তাঁর অভিযোগ, কোনও রকম আলোচনা ছাড়়াই লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। ক্যালিফর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল রব বন্টা জানিয়েছেন, নিউসামের সঙ্গে আলোচনা না করেই বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। এই সিদ্ধান্তের ফলে ট্রাম্প নিজের সীমা অতিক্রম করে গিয়েছেন বলে অভিযোগ তাঁর। বন্টা বলেন, “এখানে কোনও বিদ্রোহ নেই। প্রেসিডেন্ট তাঁর নিজস্ব রাজনৈতিক স্বার্থে এখানে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছেন।”