আর এগোবেন না। দুর্ঘটনাস্থলে রুশপন্থী এক জঙ্গি। ছবি: এএফপি
মাটি থেকে তিরিশ হাজার ফুট উপরেও বিপদ ধেয়ে আসতে পারে, আশঙ্কা করেছিলেন ওঁরা। যাত্রাপথকে চিনতেন হাড়ে হাড়ে।
মাটিতে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি। তাই পূর্ব ইউক্রেনের আকাশ দিয়ে ওড়াটা ঠিক হবে না বলে আগে থেকেই কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছিলেন মালয়েশীয় বিমান সংস্থার দুই বিমান কর্মী। তাঁরা এতটাই ভীত ছিলেন যে শেষ পর্যন্ত অভিশপ্ত এমএইচ-১৭ তে গত বৃহস্পতিবার ওঠেননি তাঁরা। অন্য দুই সহকর্মীর সঙ্গে শিফট অদল-বদল করেছিলেন। তাই ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তাঁরা।
আজ এক ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড এই খবর বেরোনোয় ফের কাঠগড়ায় মালয়েশীয় বিমান সংস্থা। তবে শুধু ওই দুই কর্মীই নন, বিমান সংস্থার চালক থেকে শুরু করে অন্য কর্মীরাও বেশ কয়েক দিন ধরেই ইউক্রেনের আকাশ দিয়ে ওড়ার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু বিমান সংস্থা কর্মীদের সেই আপত্তি কানে তোলার প্রয়োজন মনে করেননি বলে অভিযোগ। বিমানের যাত্রাপথ বদল করার জন্য ওই সংস্থার বেশ কয়েক জন বিমান চালক এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে আলোচনাও করেন বলে খবর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ফলপ্রসূ হয়নি।
ফলে গত বৃহস্পতিবার আমস্টারডাম থেকে কুয়ালা লামপুর যাওয়ার পথে পূর্ব ইউক্রেনের আকাশ দিয়েই যাচ্ছিল এমএইচ-১৭।
যে দুই কর্মী সে দিন বিমানে না উঠে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন, তাঁদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। তবে বিমান কর্মীদের আপত্তির বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে। গত কয়েক মাসের মধ্যে রুশপন্থী বিক্ষোভকারীরা দু’টি ইউক্রেনীয় বিমানকে গুলি করে নামিয়েছিল। তাই আগেই বেশ কয়েকটি বিমান সংস্থা তাদের যাত্রাপথ বদল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এশিয়ানা এয়ারলাইন্স নামে একটি সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, তাতে সময়ের তুলনায় গন্তব্যে কিছুটা দেরি হচ্ছিল বটে। কিন্তু যাত্রী সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে নতুন যাত্রাপথেই চলছিল তাদের সব উড়ান।
কিন্তু বিমান চালক ও কর্মীদের আপত্তি সত্ত্বেও মালয়েশীয় বিমান সংস্থা কেন উড়ানের যাত্রাপথ বদলের সিদ্ধান্ত নেননি, সে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে কর্মীদের আপত্তির অভিযোগটি উড়িয়ে দিয়েছে মালয়েশীয় বিমান সংস্থা। তাদের বক্তব্য, “আইএটিএ (ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন) ঘোষিত সুরক্ষিত আকাশপথেই তাদের বিমান যাতায়াত করছে। আরও দেড়শোটি বিমান সংস্থার উড়ান রোজ ওই একই রাস্তা দিয়ে যায়।
ফলে গোটা ঘটনার দায় তাদের ঘাড়ে চাপানোটা অন্যায় বলে মনে করছে মালয়েশীয় বিমান সংস্থা।