মলদ্বীপ এখন ভারতের গলার কাঁটা, আশঙ্কারও

সহযোগিতা দূরস্থান, এই সমুদ্র পথেরই একটি দ্বীপরাষ্ট্র কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বসে রয়েছে ভারতকে। একদা অতি ঘনিষ্ঠ মলদ্বীপ এখন ভারতের গলার কাঁটা!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৪৮
Share:

—ফাইল চিত্র।

সম্প্রতি ভিয়েতনামে গিয়ে ভারত মহাসাগর সংলগ্ন রাষ্ট্রগুলির মধ্যে নিরাপত্তার দুর্গ গড়ার ডাক দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। আজ নেপালে বিমস্টেক সম্মেলনেও সমুদ্র নিরাপত্তা এবং বাণিজ্য সম্পর্ক চাঙ্গা করার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সহযোগিতা দূরস্থান, এই সমুদ্র পথেরই একটি দ্বীপরাষ্ট্র কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বসে রয়েছে ভারতকে। একদা অতি ঘনিষ্ঠ মলদ্বীপ এখন ভারতের গলার কাঁটা!

Advertisement

পরিস্থিতি এমনই যে, মলদ্বীপের বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে বেজিং সামরিক ঘাঁটি বানানোর যে প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে, তা এর পর অনেকটাই এগিয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ক্ষেত্রে আর বিশেষ কিছু করারও থাকবে না নয়াদিল্লির।

মলদ্বীপ থেকে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর দু’টি কপ্টার ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাড়া দিচ্ছে মলদ্বীপ। শুধু হেলিকপ্টার নয়, সেখানে উপস্থিত ৫০ জন ভারতীয় সেনাকর্মীকেও যাতে ভারত ফিরিয়ে নেয়, সে জন্যও চাপ বাড়াচ্ছে তারা। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, এই চাপের কাছে নতিস্বীকার করে এখনই হেলিকপ্টার এবং সেনা ফেরাতে চাইছে না নয়াদিল্লি।

Advertisement

কূটনৈতিক শিবিরের মতে, ভারত মহাসাগরে নিজেদের প্রভাব বজায় রাখার জন্য মরিশাস, সেশেলস ও মলদ্বীপের মতো দেশগুলিকে হেলিকপ্টার, টহলদারি বোট ও আরও অনেক কিছু দিয়ে সাহায্য করে ভারত-চিন। সাহায্যের মোড়কে নিজেদের কৌশলগত নজরদারি এবং ঘাঁটি তৈরিই প্রকৃত উদ্দেশ্য। কিন্তু এই কাজে মলদ্বীপে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে চিন। যে মলদ্বীপে ২০১১ সাল পর্যন্ত চিনের দূতাবাসও ছিল না, আজ সেখানকার রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রতিটি পদক্ষেপে জড়িত বেজিং। গত ডিসেম্বরে সাউথ ব্লকের রক্তচাপ দ্বিগুণ করে মলদ্বীপের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করেছে চিন। মলদ্বীপও চিনের ওবর প্রকল্পে সবুজ সংকেত দিয়েছে। সে দেশের বিভিন্ন প্রকল্পে ভারতীয় সংস্থাগুলিকে হটিয়ে চিনা সংস্থাগুলি জায়গা করে নিয়েছে। ওই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিটির মাধ্যমে চিন মেগা-পরিকাঠামো প্রকল্প, আবাসন প্রকল্প, হোটেল এবং পরিবহণ প্রকল্পে একচেটিয়া লগ্নির অধিকার পেয়েছে।

মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আব্দুল গায়ুমের সমর্থক ছিল ভারত। তাঁকে বন্দি করে ক্ষমতায় এসেছেন আবদুল্লা ইয়ামিন। তাঁর আমলে দু’দেশের সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে মলদ্বীপকে আরও কাছে টানছে বেজিং, এটাই আপাতত শঙ্কা সাউথ ব্লকের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন