সংকট চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। এ বার সেই মলদ্বীপ সংকটে নতুন বিতর্ক যুক্ত হল। বুধবার সে দেশের পার্লামেন্ট থেকে সব সাংসদদের রীতিমতো পাঁজাকোলা করে বাইরে বার করে দিল সেনা বাহিনী। তবে কার নির্দেশে এ কাজ করা হল সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। বিভিন্ন সাংসদরা সেনাবাহিনীর এহেন কাজের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতেই বিতর্ক তীব্র আকার নেয়।
সম্প্রতি মলদ্বীপে জরুরি অবস্থা জারি করেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন। সন্ত্রাসের মিথ্যা অভিযোগে বিভিন্ন বিরোধী নেতাদের আটকে রেখেছেন ইয়ামিন, তাঁদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে বলেছিল মলদ্বীপের সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, ১২ জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির পদ খারিজ করে দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন, তাঁদের পার্লামেন্টে ফেরত নেওয়ার নির্দেশও জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ মানতে নারাজ প্রেসিডেন্ট। বুধবার এই কারণেই ইয়ামিনের অপসারণ দাবি করেন অনেক সাংসদেরা। সেই সমস্ত সাংসদদেরই ইয়ামিনের নির্দেশে সেনাবাহিনী পার্লামেন্ট থেকে বার করে দেয়।
কেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানছেন না প্রেসিডেন্ট?
কারণ, যে জনপ্রতিনিধিদের বরখাস্ত করা হয়েছিল, তাঁদের পুনর্বহাল করা হলে মলদ্বীপের পার্লামেন্টে সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের দল। ফলে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইয়ামিনের অপসারণের তোড়জোড় শুরু হয়ে যাবে। আর দীর্ঘ দিন ধরে যে বিরোধী নেতাদের আটকে রাখা হয়েছে, তাঁদের মুক্তি দেওয়া হলে ইয়ামিন সরকারের বিরুদ্ধে চলতে থাকা আন্দোলন আরও সংগঠিত হবে। প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন তাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানতে রাজি হননি। দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন তিনি। তাঁর নির্দেশে আদালতে হানা দিয়েছে সেনা, গ্রেফতার করা হয়েছে দুই শীর্ষ বিচারপতিকে।
রাজনৈতিক তরজার জের প্রায়ই এসে পড়ে মলদ্বীপ পার্লামেন্টে। গত জুলাই মাসেই মলদ্বীপ পার্লামেন্টের গেটে তালা লাগিয়ে দিয়েছিল সেনা। সেনা অফিসাররা ঘিরে রেখেছিলেন পার্লামেন্টের প্রবেশপথ। সদস্যরা ঢুকতে চাইলেও তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল মূল ফটক থেকে।
আরও পড়ুন: গা-ছাড়া ভাব মলদ্বীপে, মাসুল গুনছে দিল্লি