প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রাসাদে ঢুকে অপহরণ করতে হবে তাঁর দুই পোষ্যের যে কোনও একটিকে!
পিক-আপ ট্রাকে ভর্তি অস্ত্রশস্ত্র। পাম্প শটগান, .২২ ক্যালিবার রাইফেল, ভোজালি, সাড়ে তিনশো রাউন্ড গুলি— আরও কত কী!
এত কিছু নিয়ে স্কট স্টকার্ট হানা দিয়েছিলেন হোয়াইট হাউজের উদ্দেশে। অপহরণ করবেন বলে। কিন্তু মাঝ পথে বাধ সাধল নিউ ইয়র্কের পুলিশ। কিন্তু ধৃতের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে যা ঝক্কি পোহাতে হল পুলিশকে, তা সম্ভবত কুখ্যাত জঙ্গিকে গ্রেফতার করেও পোহাতে হয় না।
ট্রাকে অস্ত্রশস্ত্র ভরে নর্থ ডাকোটা থেকে নিউ ইয়র্ক হয়ে হ্যাম্পটন পর্যন্ত ৩৩২৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেন কেন স্কট স্টকার্ট? আসল কারণটা কী? দীর্ঘ জেরার পর নর্থ ডাকোটার বাসিন্দা স্টকার্টের যে কথাটা পুলিশের তবু একটু বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়েছে, তা হল, বারাক ওবামার দুই পোষ্যের মধ্যে যে কোনও একটিকে অপহরণের রোখ চেপে গিয়েছিল তাঁর। যা অস্ত্রশস্ত্র সঙ্গে ছিল, তা দিয়েই নিরাপত্তার সমস্ত বেড়া ভেঙে হোয়াইট হাউজে ঢুকে ওবামার কুকুরকে তুলে নিয়ে যেতে পারবেন বলে আত্মবিশ্বাসীও ছিলেন স্টকার্ট। তাই বেরিয়ে পড়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট ওবামার দু’টি পোষ্য রয়েছে— পর্তুগিজ ওয়াটার ডগ। নাম বো আর সানি। প্রেসিডেন্ট ওবামা সময় পেলেই নিজের হাতে পরিচর্যা করেন এই দুই পোষ্যের। এই বো আর সানির মধ্যে যে কোনও একটিকে অপহরণ করার লক্ষ্যে নর্থ ডাকোটা থেকে এক জন যে রওনা দিয়েছেন, তা প্রথম জানাতে পারে মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের মিনেসোটা ফিল্ড অফিস। এমন ঘটনা সত্যিই ঘটলে যে হুলস্থূল হবে, তা বুঝতে বাকি থাকেনি গোয়েন্দাদের। নিউ ইয়র্ক হয়ে ওয়াশিংটনের দিকে ততক্ষণে রওনা দিয়েছেন স্টকার্ট। হ্যাম্পটনে পৌঁছে তিনি একটি রেস্তরাঁয় ঢোকেন। পুলিশ তখনই পৌঁছে যায় স্টকার্টের কাছে। তবে স্টকার্ট কোনও রাখঢাক না করে গোড়াতেই যেভাবে পুলিশকে জানিয়ে দেন যে তাঁর কাছে আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে, তাতে তদন্তকারীরাও একটু হকচকিয়েই গিয়েছিলেন। তাঁদের আরও চমকে দিয়ে স্কট স্টকার্ট নিজেই তাঁদের নিয়ে যান পিক আপ ট্রাকের কাছে। সিট তুলে দেখিয়ে দেন, কী কী অস্ত্র নিয়ে বেরিয়েছেন তিনি। লাইসেন্স যে নেই, তাও জানিয়ে দেন স্টকার্ট। পুলিশ স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে হেফাজতে নেয়। কিন্তু জেরা করতে আরও ধাঁধায় পড়ে যান তদন্তকারীরা। স্টকার্ট কখনও বলছেন, তিনি খোদ যিশু খ্রিস্ট। কখনও বলছেন দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি লড়বেন। আবার কখনও বলছেন তিনি আসলে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট কেনেডি আর হলিউডের প্রবাদপ্রতিম সুন্দরী মেরিলিন মনরোর সন্তান।
স্টকার্টের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন ভাঙার অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালত স্টকার্টকে জামিনে মুক্তি দিয়েছে বটে। তবে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে আদালত আবার শুনানির তারিখ ঘোষণা করবে। তার আগে আগে পর্যন্ত স্টকার্টের উপর কড়া নজরদারি রাখতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই সময়ের মধ্যে স্টকার্টের হাতে আসল বা নকল কোনও অস্ত্রই যেন দেখা না যায়— নির্দেশ আদালতের। ওয়াশিংটন ডিসি’র দিকে স্টকার্টের যাতায়াতের উপরও আপাতত জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।