Harvard University-Donald Trump

বিদেশি পড়ুয়াদের অর্থনির্ভর আমেরিকার বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান! হার্ভার্ড-কাণ্ডের পর ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট রাখতে পর পর বার্তা

স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের বিদেশি পড়ুয়ার সংখ্যার নিরিখে হার্ভার্ডের অবস্থান মাঝের সারিতে। স্নাতকোত্তর স্তরে ৯০ শতাংশ বিদেশ পড়ুয়াসমৃদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে আমেরিকায়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৫ ১৫:৫৭
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

শুক্রবার আদালতের জোড়া নির্দেশে সাময়িক স্বস্তি মিলেছে। কিন্তু হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ভবিষ্যতে আরও কয়েকটি মার্কিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিদেশি পড়ুয়াদের (গবেষক-সহ) ‘জাতীয় নিরাপত্তা’র অছিলায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার নিশানা করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের কয়েক লক্ষ পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ।

Advertisement

স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের বিদেশি পড়ুয়ার সংখ্যার নিরিখে হার্ভার্ডের অবস্থান মাঝের সারিতে। স্নাতকোত্তর স্তরে ৯০ শতাংশ বিদেশ পড়ুয়া সমৃদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে আমেরিকায়। পরিসংখ্যান বলছে, সামগ্রিক ভাবে বিদেশি পড়ুয়ার নিরিখে হার্ভার্ডের অবস্থান ১৫ নম্বরে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের প্রায় ২১ হাজার পড়ুয়ার মধ্যে প্রায় ২৮ শতাংশ (প্রায় ৬০০০) বিদেশি। এর মধ্যে স্নাতক স্তরের প্রায় সাড়ে সাত হাজার পড়ুয়ার ১৪ শতাংশ এবং স্নাতকোত্তর স্তরের প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার শিক্ষার্থীর ৩৬ শতাংশ বিদেশি। ইলিনয় টেক, কলাম্বিয়া, বস্টন, কার্নেগি মেলন, জন্স হপকিন্স, শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি এ ক্ষেত্রে ঢের এগিয়ে।

ট্রাম্প সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে বিদেশি পড়ুয়াদের মোট আর্থিক অবদান ছিল ৪৩০০ কোটি ডলার (৩ লক্ষ ৬৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি)! ‘ক্যাম্পাসে ইহুদি বিদ্বেষ এবং চিনা কমিউনিস্ট মতাদর্শের বাড়বাড়ন্তে’র অজুহাতে ট্রাম্প সরকারের ‘হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সার্ভিস’ হার্ভার্ডের মতো অন্যান্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির বিদেশি পড়ুয়াদের নিশানা করলে সামগ্রিক ভাবে মার্কিন অর্থনীতিতে তার প্রত্যক্ষ নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ক্ষতিগ্রস্তহবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি।

Advertisement

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

এই পরিস্থিতিতে কলম্বিয়া, ইলিনয়, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বেশ কয়েকটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ তাঁদের ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের বিষয়ে নিয়ন্ত্রণের কথা ঘোষণা করেছেন। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাসে আয়োজিত সভা-সমাবেশে বহিরাগতদের যোগদান নিয়ে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। অনিশ্চয়তার এই আবহে অবশ্য পড়ুয়াদের বাক্‌স্বাধীনতার অধিকার সম্পর্কে আগের অবস্থানে অনড় রয়েছেন। বস্তুত, বৃহস্পতিবার ট্রাম্প সরকারের বিধিনিষেধ জারির পরেই এ বিষয়ে সংঘাতের পথে হাঁটার বার্তা দিয়েছিল হার্ভার্ড।

প্রসঙ্গত, ওই নির্দেশিকায় ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছিল, ছ’দফা শর্ত না মানলে আগামী শিক্ষাবর্ষে বিদেশ থেকে আর পড়ুয়াদের ভর্তি নিতে পারবে না হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি জানানো হয়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন যে সব বিদেশি পড়ুয়া পড়াশোনা করছেন, তাঁদের এক মাসের মধ্যে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হবে। নয়তো তাঁদের ভিসা বাতিল করা হবে। এর পরেই শুক্রবার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র জেসন নিউটন সরকারের ওই পদক্ষেপের নিন্দা করেছিলেন। শুক্রবার হার্ভার্ডের পরিচালন সমিতির প্রেসিডেন্ট অ্যালান এম গার্বার বলেন, ‘‘সরকারের পদক্ষেপ বেআইনি এবং অযৌক্তিক। এর ফলে মেধার উৎকর্ষে আঘাত আসবে।’’

ট্রাম্প সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চেয়ে ম্যাসাচুসেটসের বস্টন ফেডারেল আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে বিদেশি পড়ুয়া ভর্তির উপর ট্রাম্প সরকারের জারি করা বিধিনিষেধ স্থগিত করেছে বস্টনের ফেডারেল আদালত। ঘটনাচক্রে, শুক্রবার সকালেও বিদেশি পড়ুয়াদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করা নিয়ে ট্রাম্প সরকারের আর এক নির্দেশিকাকে স্থগিত করেছিলেন ক্যালিফর্নিয়ার নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টের ফেডারেল বিচারক জেফ্রি হোয়াইট। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন যে সব বিদেশি পড়ুয়া পড়াশোনা করছেন, তাঁদের দ্রুত অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার ‘ফরমান’ দিয়েছিল ওভাল অফিস। নয়তো তাঁদের ভিসা বাতিল করা হবে বলে গত ২২ মে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন আমেরিকার নিরাপত্তা সচিব ক্রিস্টি নোয়াম। কিন্তু বিচারক হোয়াইট অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে জানান, এ ভাবে পড়ুয়াদের ভিসা বাতিল করা যাবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement