ইরানের ম্যারাথনে মহিলা প্রতিযোগীরা। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।
ইরানে ম্যারাথনে হিজাব না-পরেই দৌড়েছেন বেশ কয়েক জন মহিলা। হিজাব না-পরা সত্ত্বেও কেন তাঁদের ম্যারাথনে অংশ নিতে দেওয়া হল? সেই প্রশ্ন তুলেই এ বার আয়োজকদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিল ইরানের বিচার বিভাগ। এমনই খবর সংবাদমাধ্যম বিবিসি সূত্রে।
ইরানের দক্ষিণ উপকূলের কিশ দ্বীপে একটি ম্যারাথনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই ম্যারাথনে ২০০০ মহিলা এবং ৩০০০ হাজার পুরুষ আলাদা আলাদা ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। মহিলাদের ম্যারাথনের ছবি প্রকাশ হতেই বিতর্ক শুরু হয় ইরানে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিয়ম ছিল ওই ম্যারাথনে হিজাব পরে মহিলারা অংশ নিতে পারবেন। কিন্তু অনেকেই হিজাব ছাড়াই হাজির হন। শুধু তা-ই নয়, তাঁদের মাথায় কোনও আবরণও ছিল না, যা ইরানের কঠোর পোশাকবিধির বিরোধী!
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল শুরু হয়। ইরানের বিচার বিভাগের ওয়েবসাইট জানিয়েছে, প্রতিযোগিতার দুই আয়োজকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে গ্রেফতার করা হয়েছে। পশ্চিম এশিয়ার শিয়া প্রধান রাষ্ট্র ইরানে মহিলাদের জন্য কড়া পোশাকবিধি রয়েছে। সে দেশের আইন অনুযায়ী, মহিলাদের সর্বত্র হিজাব পরে থাকতে হয়। না-মানলে কড়া শাস্তির নিদানও রয়েছে। এই পোশাকবিধি নিয়ে বার বার প্রতিবাদ হয়েছে ইরানে।
অতীতে হিজাব না-পরার জন্য মহিলাদের উপর বিভিন্ন ধরনের কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছিল। ২০২২ সালে ইরানি তরুণী মাহসা আমিনিকেও হিজাব না পরার ‘অপরাধে’ তুলে নিয়ে গিয়েছিল ইরানের নীতিপুলিশ। ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। মাহসার মৃত্যুর পর গোটা ইরানে যখন প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গিয়েছিল। গত বছর পোশাক-ফতোয়ার প্রতিবাদে ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসলামিক আজ়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া আহু দারইয়াই প্রকাশ্যে অন্তর্বাস পরে হেঁটেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল ইরানের পুলিশ।
ম্যারাথনের ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ইরানে। পোশাকবিধি পরিবর্তনের সমর্থকেরা ম্যারাথনে হিজাব না-পরা মহিলাদের প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের মতে, এটা ইরান প্রশাসনের কঠোর বিধির বিরুদ্ধে সাহসী জবাব। তবে কেউ কেউ এই কর্মকাণ্ডকে ‘জনসাধারণের শালীনতা লঙ্ঘন’ বলে আওয়াজ তুলেছেন।