মাসুদ নিয়ে আশার বাণী চিনের, স্বস্তিতে ভারত

জঙ্গি তালিকায় মাসুদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে তাঁরা ‘আশাবাদী’ মনোভাব নিয়ে চলছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৫:৫৫
Share:

মাসুদ আজহার নিয়ে সুর নরম চিনের। —ফাইল চিত্র

জইশ-ই-মহম্মদ নেতা মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে না-দেওয়ার পর আজ প্রথম মুখ খুলল চিন। যা কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে ভোটের মুখে দাঁড়ানো মোদী সরকারকে। দিল্লিতে নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূত লিউ চানচাও জানিয়েছেন, জঙ্গি তালিকায় মাসুদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে তাঁরা ‘আশাবাদী’ মনোভাব নিয়ে চলছেন।

Advertisement

তাঁর কথায়, ‘‘মাসুদ আজহারের বিষয়টি আমরা পুরোপুরি বুঝতে পারছি এবং বিশ্বাসও করি। এ ব্যাপারে ভারতের উদ্বেগও আমাদের অজানা নয়। আশা করি বিষয়টির শীঘ্র সমাধান হবে।’’ এর পর তিনি বলেন, ‘‘এ’টিকে টেকনিকাল হোল্ড-এ রাখা হয়েছে। যার অর্থ ক্রমাগত আলোচনার জায়গা রয়েছে। সমাধান হবেই।’’

চিনের এই মন্তব্য নেহাতই শুকনো আশ্বাস কি না, তা নিয়ে চুলচেরা বিতর্কের মধ্যে এই মুহূর্তে যেতে চাইছে না সরকার। সে অবকাশও ভোটের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে, তাদের কাছে নেই। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, চিনের তরফ থেকে আলোচনার রাস্তা খুলে রাখার ঘোষণা আশাব্যঞ্জক। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, মাসুদ আজহারকে নিয়ে পুলওয়ামা কাণ্ডের পর গোটা বিশ্ব জুড়ে যে আলোড়ন তৈরি হয়েছে, সেটা আগে হয়নি। আমেরিকা নিজে মাসুদ-বিরোধী প্রস্তাব এনেছিল। পাশে দাঁড়িয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ফ্রান্স তার দেশে মাসুদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্রিটেন-রাশিয়াও সমর্থন করছে ভারতকে। এই অবস্থায় একটা ভারসাম্যের জায়গায় আসতে চাইছে বেজিং।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

নয়াদিল্লি ঘরোয়া ভাবে জানাচ্ছে— মাসুদকে যাতে আন্তর্জাতিক জঙ্গি তালিকায় আনা যায়, তার জন্য বেজিংকে চাপে রাখতে গোটা বিশ্বে দরবার করা হচ্ছে। কিন্তু চিনের সঙ্গে সরাসরি বৈরিতা তৈরি বা তাদের সঙ্গে দরকষাকষির রাস্তাতে হাঁটা হচ্ছে না। কারণ, সেটা করা হলে দলাই লামা থেকে অরুণাচল, ওবর থেকে জম্মু ও কাশ্মীর, এমনকি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য নিয়েও বেজিং ভারতের উপর এমন চাপ তৈরি করতে পারে, যাতে হিতে বিপরীত হবে। এমনিতেই ডোকলাম সংঘাত ঘিরে হাত পুড়েছে নয়াদিল্লির। তার পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, অগ্নিগর্ভ প্রতিবেশী বলয়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে চিনের সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত করা হবে না। সেই নীতির কোনও বদল না ঘটিয়ে এখনও চিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক রেখে পরোক্ষে তাদের উপর আমেরিকা, ফ্রান্স, ব্রিটেনের মতো দেশগুলিকে দিয়ে চাপ তৈরি করার রাস্তাই নেওয়া হয়েছে। সাউথ ব্লকের দাবি, তাতে কিছুটা হলেও কাজ হচ্ছে। আজ চিনের রাষ্ট্রদূতের কথায়, ‘‘উহান শীর্ষ সম্মেলনের পর দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা ঠিক পথে চলছে। আমরা এই সহযোগিতার প্রশ্নে খুশি। এবং ভবিষ্যৎ নিয়েও আশাবাদী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন