United Nations

সামুদ্রিক জীবন রক্ষায় রাষ্ট্রপুঞ্জের জরুরি চুক্তি

সমাজকর্মীরা বলছেন, ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে আলোচনা চলেছে। অবশেষে জীববৈচিত্র রক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement
রাষ্ট্রপুঞ্জ শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৩ ০৬:০৬
Share:

সামুদ্রিক জীবন রক্ষার রাষ্ট্রপুঞ্জে জরুরী নোটিস। — ফাইল চিত্র।

দীর্ঘ আলোচনা, বছরের পর বছর ধরে বহু সমঝোতার পরে অবশেষে পৃথিবীর সামুদ্রিক জীবনকে রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ হল রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্য দেশগুলি। গত কাল নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সদর দফতরে রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ বিশেষ সমাবেশে বসেছিল। সমুদ্র-রক্ষার শর্তে সদস্য দেশগুলি সম্মত হলে সভাপতি রেনা লি ঘোষণা করেন, ‘‘জাহাজ তীরে পৌঁছেছে।’’ তাঁর কথায় হাততালিতে ফেটে পড়ে সভাকক্ষ।

Advertisement

সমাজকর্মীরা বলছেন, ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে আলোচনা চলেছে। অবশেষে জীববৈচিত্র রক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। গত ডিসেম্বরে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। সেই চুক্তির বিষয়ে গত কাল সব সদস্য একমত হয়েছে। চুক্তিতে স্থির হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবীর স্থল ও জলের ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ করা হবে। একটি প্রকৃতি বিষয়ক সংগঠনের কর্ত্রী লরা মেলার বলেন, ‘‘পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়ে একটি ঐতিহাসিক দিন। ভূরাজনৈতিক টানাপড়েন কাটিয়ে দ্বিধাবিভক্ত পৃথিবী, প্রকৃতি ও মানুষকে রক্ষায় একজোট হয়েছে।’’

এ বিষয়ে সাম্প্রতিক বৈঠকগুলিও লম্বা চলেছে। দু’সপ্তাহ ধরে গভীর আলোচনা, শুক্র ও শনিবার রাতভর ম্যারাথন অধিবেশন, তার পর সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।

Advertisement

চুক্তিপত্রটিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রহণ করা হবে শীঘ্রই। তার আগে কিছু নিয়মকানুন রয়েছে। আইনজীবীরা খতিয়ে দেখবেন। ছ’টি ভাষায় চুক্তিপত্রটিকে অনুবাদ করা হবে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস সংগঠনের প্রতিনিধিদের জানান, এই চুক্তি ‘বহুপাক্ষিকতার জয়’। তিনি আরও বলেছেন, ‘‘ধ্বংসের মুখে সমুদ্র। পৃথিবীর জলভাগকে রক্ষায় যে সার্বিক প্রচেষ্টা করা হচ্ছে, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য, তা সত্যিই বড় জয়।’’

বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, সমুদ্র উপকূল থেকে ৩৭০ কিলোমিটার পেরোলে শুরু হয় ‘হাই সি’ বা গভীর সমুদ্র। এই অংশ কোনও দেশের বিচারবিভাগের মধ্যে পড়ে না। পৃথিবীর সামুদ্রিক অঞ্চলের ৬০ শতাংশই গভীর সমুদ্র। ভূপৃষ্ঠের প্রায় অর্ধেক অংশ জুড়ে বিস্তৃত হলেও গভীর সমুদ্র ও তার পরিবেশ নিয়ে রাষ্ট্রপ্রধানদের কোনও মাথাব্যথা নেই। অথচ মানুষের শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অর্ধেকই তৈরি হয় এই সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রে। বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড শুষে নেয় সমুদ্র। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ, অতিরিক্ত মাছ ধরা— এ সবের জেরে সমুদ্রের জীবন বিপর্যস্ত। বর্তমানে গভীর সমুদ্রের মাত্র ১ শতাংশ সুরক্ষিত রয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের চুক্তি কার্যকর হলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় সামুদ্রিক প্রাণীদের জন্য সুরক্ষিত অঞ্চল তৈরি করা সম্ভব হবে। সংবাদ সংস্থা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন