ভিসা সংক্রান্ত নির্দেশনামায় স্বাক্ষর ডোনাল্ড ট্রাম্পের। শুক্রবার। ছবি: রয়টার্স।
‘এইচ-১বি’ ভিসা নিয়ে আমেরিকায় থাকা কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রেই থাকতে বলল মেটা (ফেসবুক, হোয়াট্সঅ্যাপের নিয়ন্ত্রক সংস্থা), অ্যামাজ়ন, মাইক্রোসফ্ট, জেপি মর্গানের মতো বহুজাতিক সংস্থাগুলি। যে কর্মীরা আমেরিকার বাইরে রয়েছেন, তাঁদের রবিবারের মতো ফিরতে বলা হয়েছে। সংস্থাগুলির তরফে কর্মীদের পাঠানো মেল যাচাই করে এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
রয়টার্স-এর প্রতিবেদন অনুসারে, মাইক্রোসফ্ট কর্মীদের মেল পাঠিয়ে বলেছে, “যাঁদের কাছে ‘এইচ-১বি’ এবং ‘এইচ-৪’ ভিসা রয়েছে, তাঁদের আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমেরিকায় ফিরতে বলছি।” এই নির্দিষ্ট সময় রবিবার বলে জানিয়েছে রয়টার্স। সংবাদ সংস্থাটির তরফে আরও জানানো হয়েছে যে, জেপি মর্গান এইচওয়ান বি থাকা কর্মীদের আমেরিকায় থাকতে বলার পাশাপাশি পরবর্তী নির্দেশ না-দেওয়া পর্যন্ত অন্য দেশে যেতে বারণ করেছে।
কী কারণে এই নির্দেশ বা ‘পরামর্শ’, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে সংস্থাগুলির এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভিসা সংক্রান্ত সাম্প্রতিক ঘোষণা প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। শুক্রবার একটি নির্দেশনামায় স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। তাতে বলা হয়েছে, এ বার থেকে ‘এইচ-১বি’ ভিসার জন্য মার্কিন সংস্থাগুলির কাছ থেকে বছরে এক লক্ষ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৮৮ লক্ষ টাকা) করে নেবে সরকার। ‘এইচ-১বি’ ভিসা একটি অ-অভিবাসী ভিসা। এর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের দক্ষ কর্মীরা আমেরিকায় থেকে সেখানকার সংস্থার হয়ে কাজ করেন। ট্রাম্প সরাসরি এই উপায় বন্ধ করে দিচ্ছেন না। তবে এমন মোটা অঙ্কের মূল্য তিনি ধার্য করলেন, যাতে এই ধরনের কর্মীদের আর নিয়োগ করতে চাইবে না কোনও সংস্থা। রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্পের এই নির্দেশনামার কারণে আমেরিকার তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র বড়সড় ধাক্কা খেতে চলেছে। অধিকাংশ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাই দক্ষ বিদেশি কর্মীদের উপর নির্ভর করে থাকে। অধিকাংশ কর্মী যান ভারত এবং চিন থেকে।
প্রসঙ্গত, ‘এইচ-১বি’ ভিসা নিয়ে সবচেয়ে বেশি কর্মী আমেরিকার যে সংস্থায় কাজ করেন, সেটি হল অ্যামাজ়ন। ওই সংস্থার ১০ হাজারেরও বেশি কর্মী ‘এইচ-১বি’ ভিসা নিয়ে আমেরিকায় থাকেন। তার পরেই রয়েছে টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিস (টিসিএস)। ওই সংস্থায় এই সংখ্যাটা ৫৫০৫। তার পর যথাক্রমে রয়েছে মাইক্রোসফ্ট (৫১৮৯), মেটা (৫১২৩), অ্যাপ্ল (৪২০২), গুগ্ল (৪১৮১)। ট্রাম্পের ভিসা সংক্রান্ত ঘোষণার পর এই সংস্থাগুলির বক্তব্য জানা যায়নি। তবে আমেরিকার বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিক জানিয়েছেন, আমেরিকার সব বহুজাতিক সংস্থার সঙ্গে কথা বলেই ভিসা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।