সু চি-র জয় মেনে অবশেষে বার্তা সেনার

তিন দিন আগেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল ছবিটা। বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে মায়ানমারে ক্ষমতা দখলের পথে আউং সান সু চি-র ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি)।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ইয়াঙ্গন শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৫ ০২:৪৮
Share:

তিন দিন আগেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল ছবিটা। বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে মায়ানমারে ক্ষমতা দখলের পথে আউং সান সু চি-র ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি)। এত দিনে গণতন্ত্রের জয়কে স্বীকৃতি দিয়ে এনএলডি-কে অভিনন্দন জানাল সেনা এবং বর্তমান শাসক দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)।

Advertisement

১৯৬২ থেকে গোটা দেশের ক্ষমতা নিজেদের হাতে কুক্ষিগত রেখেছে মায়ানমার সেনা। ২০১১ থেকে দেশ শাসন করছে ইউএসডিপি। এত দিন ধরে তাদের পিছনে ছিল সেনারই সমর্থন। এত বছর নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখার পরে অবশেষে দেশে সাধারণ নির্বাচন করাতে রাজি হয়েছিল সেনা। গত রবিবার ছিল সেই ভোট। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দেশ গড়ার সুযোগ সে দিন পুরোপুরি উসুল করে নিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ। ভোট পড়েছিল প্রায় ৮০ শতাংশ।

ভোট গ্রহণের পর দিন, অর্থাৎ সোমবার থেকে শুরু হয় ভোট গণনা। স্পষ্ট হয়ে যায়, বিপুল ভোটে জিতে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে চলেছে এনএলডি। কিন্তু মাঝখানে এই কটা দিন সু চি-র দলের সেই জয়ই ঘোষণা করতে গড়িমসি করেছে সেনা ও বর্তমান শাসক দল ইউএসডিপি। এনএলডি তখন অভিযোগ করেছিল, গণতন্ত্রের জয় মেনে নিতে না পেরেই ভিতরে ভিতরে কিছু পরিকল্পনা করছে সেনা। কিন্তু আজ সেনা ও শাসক দল উভয়েই তাদের ফেসবুক পেজে সু চি ও তাঁর দলকে অভিনন্দন জানিয়েছে। নতুন সরকার গঠনে তারা এনএলডি-র পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছে। আজ দেখা যায়, প্রায় ৮৫ শতাংশ আসন পেয়েছে এনএলডি। পার্লামেন্টে নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেতে যেখানে ৬৭ শতাংশ আসন পাওয়াই যথেষ্ট ছিল। তবে কিছু আসনের ফল ঘোষণা এখনও বাকি।

Advertisement

মায়ানমারের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘এত মানুষের সমর্থন জোগাড় করতে পারায় চেয়ায়পার্সন আউং সান সু চি ও তাঁর দলকে অভিনন্দন।’’ সেনা নিজেদের ফেসবুক পেজে লিখেছে, ‘‘ভোটে এত ভাল ফল করায় এনএলডি-কে অভিনন্দন।’’ তবে শুধু দেশেই নয়, শুভেচ্ছার বার্তা এসেছে বিদেশ থেকেও। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লন্ডন পৌঁছে টুইট করেছেন, ‘‘সু চি-র সঙ্গে কথা হল। তাঁকে অভিনন্দন জানালাম। তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে গোটা ভারত আগ্রহী।’’ দেশে স্বচ্ছ নির্বাচন করানোর জন্য শাসক দল আর সেনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও। এনএলডি নেত্রী সু চি-কেও আলাদা করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। দেশে গণতন্ত্রের রাস্তা সুগম করতে সু চি-র প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

তবে এত জনসমর্থন পেয়ে ক্ষমতায় এলেও প্রেসিডেন্টের গদিতে বসতে পারবেন না নোবেলজয়ী সু চি। তাঁর সন্তানরা বিদেশের নাগরিক, এই যুক্তিতে সু চি-কে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। আর ইতিমধ্যেই সংবিধান সংশোধন করে পার্লামেন্টের এক চতুর্থাংশ আসনও দখল করে রেখেছে তারা। ক্ষমতা হস্তান্তরে সেনা এনএলডি-কে সাহায্য করবে বলেও ঘোষণা করে দিয়েছে। কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট না হতে পারলেও পরোক্ষে সু চি-ই দেশ চালাবেন বলে মনে করছেন অনেকে। বর্তমান সেনা প্রধানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও খুব একটা মধুর নয়। সে ক্ষেত্রে সেনার সঙ্গে সু চি-র সমীকরণটা ঠিক কী হবে, তা জানতেই আগ্রহী এখন গোটা বিশ্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন