monolith

ভিনগ্রহীদের কাণ্ড? শিল্পকর্ম? রহস্যের অন্য নাম মোনোলিথ

প্রকৃতির খেলার পাশাপাশি মানুষের ভাস্কর্যও অনেক সময় জন্ম দেয় মোনোলিথের। সেরকমই কিছু মোনোলিথ গত কয়েক মাস ধরে ছিল চাঞ্চল্যের কেন্দ্রে।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২১ ১৪:৩০
Share:
০১ ১৮

অতিমারির বছরের শেষভাগে আচমকাই চাঞ্চল্য কেড়ে নিয়েছিল মোনোলিথ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শোনা যাচ্ছিল রহস্যজনক এই স্থাপত্যের কথা। বেশিরভাগ জায়গাতেই এই স্থাপত্য এসেছে, আবার ‘ভ্যানিশ’ও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এর পিছনে কী রহস্য লুকিয়ে আছে, তার বেশিরভাগটাই এখনও অজানা।

০২ ১৮

মোনোলিথ কী? ‘মোনো’ শব্দ এসেছে গ্রিক ‘মোনোস’ থেকে। এর অর্থ হল এক। একটি বড় পাথর বা শিলাখণ্ডের অবস্থানকে বলা হয় মোনোলিথ।

Advertisement
০৩ ১৮

অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘ দিন আবহবিকারের ফলে কোনও বড় পাহাড় ক্ষয়ে ক্ষয়ে মোনোলিথের আকার ধারণ করে। বিশ্বের বৃহত্তম প্রাকৃতির মোনোলিথ আছে উত্তর অস্ট্রেলিয়ার উলুরুতে।

০৪ ১৮

পাশাপাশি বিশ্বের বাকি প্রাকৃতিক মনোলিথের মধ্যে বিখ্যাত হল গ্রিসের রোডস দ্বীপ, নামিবিয়ার ব্র্যান্ডবার্গ পাহাড় এবং ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোর গাভিয়া পাথর। বেঙ্গালুরু থেকে ৬০ কিমি উত্তরে ‘শাওনদুর্গা’ টিলা ভারত তথা বিশ্বের উল্লেখযোগ্য মোনোলিথ।

০৫ ১৮

প্রকৃতির খেলার পাশাপাশি মানুষের ভাস্কর্যও অনেক সময় জন্ম দেয় মোনোলিথের। সেরকমই কিছু মোনোলিথ গত কয়েক মাস ধরে ছিল চাঞ্চল্যের কেন্দ্রে।

০৬ ১৮

সাম্প্রতিক অতীতে সবথেকে প্রথমে কৃত্রিম মোনোলিথের খবর আসে আমেরিকার উটাহ থেকে। সান জুয়ান কাউন্টির উত্তরে বেলেপাথরের গিরিখাতে ৯ ফুট ৮ ইঞ্চির একটি ধাতব নির্মাণ আবিষ্কৃত হয়।

০৭ ১৮

মনে করা হচ্ছে, জনশূন্য প্রান্তরে এই মোনোলিথ বসানো হয়েছিল ২০১৬ সালের জুলাই বা অক্টোবরের মাঝামাঝি কোনও একটা সময়ে। তবে জনসমক্ষে এসেছে ২০২০ সালের নভেম্বরে। সে সময় কয়েক জন জীববিজ্ঞানী ওই এলাকার উপর দিয়ে হেলিকপ্টারে করে টহল দিচ্ছিলেন। বড় শিংওয়ালা বুনো ভেড়ার খোঁজে চলছিল তাঁদের অনুসন্ধান। সে সময়েই তাঁদের চোখে পড়ে মোনোলিথটি।

০৮ ১৮

উল্লম্ব অথচ ত্রিকোণবিশিষ্ট মোনোলিথটি স্টেনলেস স্টিল অথবা অ্যালুমিনিয়মে নির্মিত বলে মনে করা হয়েছিল। ওই জনবিরল জায়গায় কোথা থেকে মোনোলিথ এল, তা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে।

০৯ ১৮

স্বভাবতই ভিনগ্রহীদের সম্ভাবনার কথা ভিড় করেছে মানুষের কল্পনায়। তবে যে কপ্টারচালকের চোখে প্রথম মোনোলিথ ধরা পড়েছিল, সেই ব্রেট হাচিংসের ধারণা, এটা কোনও শিল্পীর তৈরি।

১০ ১৮

আবার হাচিংস মজা করে এ-ও বলেন, ‘২০০১: এ স্পেস ওডিসি’ ছবির কোনও ভক্তই ওই মোনোলিথ বসিয়েছেন। প্রসঙ্গত ১৯৬৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কল্পবিজ্ঞানভিত্তিক এই ছবি তৈরি হয়েছিল বিখ্যাত কল্পবিজ্ঞান লেখক আর্থার সি ক্লার্কের লেখা ‘দ্য সেন্টিনেল’ ছোটগল্প থেকে। ছবির একজন চিত্রনাট্যকারও ছিলেন ক্লার্ক।

১১ ১৮

ক্রমে ইন্টারনেটে উটাহ-র মোনোলিথ নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়াতে থাকে। উৎসাহীরা ভিড় জমাতে আগ্রহী হন মোনোলিথের গন্তব্যে। কিন্তু সকলের আশায় জল ঢেলে রাতারাতি উধাও হয়ে যায় মোনোলিথটি। কে বা কারা কোথায় নিয়ে গিয়েছে সেটিকে, সে সব তথ্য আজও রহস্যাবৃত।

১২ ১৮

তবে উটাহর স্থানীয় প্রশাসনেরও ধারণা, ওই মোনোলিথ একটি শিল্পকর্ম। তবে তাঁদের সাফ দাবি, পাবলিক ল্যান্ডে ওভাবে একটা শিল্পকর্ম বসিয়ে যাওয়া আইনবিরুদ্ধ, তা সেটা যে গ্রহের মানুষের কীর্তিই হোক না কেন।

১৩ ১৮

উটাহর পর বিশ্বের আরও অন্য প্রান্ত থেকেও মোনোলিথের খবর আসতে থাকে। আফ্রিকার মরোক্কো, ইউরোপের অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, চেক প্রজাতন্ত্র, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, হাঙ্গেরি, ইটালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, স্পেন, সুইডেন, ইউক্রেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ইরান-সহ বহু দেশ থেকে রহস্যজনক মোনোলিথের খবর আসতে থাকে।

১৪ ১৮

বাদ যায়নি ভারতও। গুজরাতে আমদাবাদের প্রাণকেন্দ্রে অভিজাত এলাকায় সিম্ফনি ফরেস্ট পার্ক থেকে মোনোলিথের খবর পাওয়া যায়। উল্লম্ব প্রিজম আকৃতির ধাতব মোনোলিথের গায়ে কিছু লেখা আছে বলেও জানা যায়।

১৫ ১৮

মুহূর্তের মধ্যে এই মোনোলিথ হয়ে ওঠে আমদাবাদবাসীর আগ্রহের কেন্দ্র। প্রথমে রহস্য তৈরি হলেও বেশিদিন ধোঁয়াশার আবরণে থাকেনি এই নির্মাণ। সরকারের পাশাপাশি এই পার্ক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে শীতাতপ যন্ত্র নির্মাতা একটি সংস্থা।

১৬ ১৮

জানা গিয়েছে, উদ্যোক্তারাই তৈরি করেছেন ৭ ফুট উঁচু এই মোনোলিথ। চকচকে স্টিলের গায়ে যাতে পুরো বাগানের প্রতিবিম্ব ধরা পড়ে এবং উৎসাহীদের সেলফি পয়েন্ট হিসেবেই তৈরি করা হয়েছে এই মোনোলিথ।

১৭ ১৮

কল্পবিজ্ঞানের পাতা থেকে উঠে আসা মোনোলিথ শেষে আমদাবাদে হয়ে ওঠে বাগানের সাজসজ্জার অঙ্গ।

১৮ ১৮

কিন্তু আমদাবাদের রহস্যের সমাধান হলেও এখনও বিশ্বের বহু মোনোলিথের রহস্য অধরা। কারা রেখে যাচ্ছে, কেনই বা সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে সবার অজান্তে— উত্তর নেই বহু প্রশ্নেরই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
Advertisement
আরও গ্যালারি
Advertisement