Jaish-e-Mohammed

সিঁদুর অভিযানে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, বহাওয়ালপুরের সেই জঙ্গিঘাঁটি পুনর্নির্মাণের জন্য এ বার টাকা চাইছে মাসুদের জইশ!

গত মে মাসে সিঁদুর অভিযান করে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। পাকিস্তানের বহাওয়ালপুরে জইশ-ই-মহম্মদ (জেইএম)-এর প্রধান প্রশিক্ষণ এবং প্রচারকেন্দ্র সেই ‘জামা-এ-মসজিদ শুভান আল্লাহ্’ ক্যাম্পাস মেরামতের তোড়জোড় শুরু হল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৫ ১৯:৪৮
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

গত মে মাসে সিঁদুর অভিযান করে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। পাকিস্তানের বহাওয়ালপুরে জইশ-ই-মহম্মদ (জেইএম)-এর প্রধান প্রশিক্ষণ এবং প্রচারকেন্দ্র সেই ‘জামা-এ-মসজিদ শুভান আল্লাহ্’ ক্যাম্পাস মেরামতের তোড়জোড় শুরু হল। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নতুন করে ঘাঁটি তৈরির জন্য এ বার অর্থ সাহায্য চাইছে জঙ্গি সংগঠন জইশ।

Advertisement

লাহৌর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে বহওয়ালপুর শহর পাকিস্তানের দ্বাদশ বৃহত্তম শহর। একে জইশের শক্ত ঘাঁটি বলে মনে করা হয়। সেখানে ‘জামা-এ-মসজিদ শুভান আল্লাহ্’ ক্যাম্পাস ১৮ একর জমি জুড়ে বিস্তৃত। দাবি, জইশ জঙ্গিদের সেখানে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। জইশের প্রতিষ্ঠাতা মৌলানা মাসুদ আজ়হার বহওয়ালপুরের বাসিন্দা, ওই ক্যাম্পাসেই থাকতেন। অন্তত ভারতের অপারেশন সিঁদুর অভিযানের আগে পর্যন্ত গোয়েন্দা রিপোর্টে তেমনই খবর মিলেছিল বলে দাবি। ভারতীয় সেনার আক্রমণের পর জইশ নেতার ঠাঁই কোথায় হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। যদিও বুধবার সমাজমাধ্যমে সেই মসজিদ চত্বর পুনর্নির্মাণের জন্য অর্থ সাহায্য চাওয়া হয়েছে।

গত এপ্রিল মাসে পহেলগাঁও কাণ্ডের পর মে মাসের শুরুতে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ন’টি জায়গায় জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ করে ভারতীয় সেনা। তার মধ্যেই অন্যতম ছিল বহাওয়ালপুরে জইশের ঘাঁটি।

Advertisement

ভারতের আক্রমণের পর ওই জঙ্গিঘাঁটির ধ্বংসস্তূপের কৃত্রিম উপগ্রহচিত্রও মিলেছিল। দেখা গিয়েছিল, ‘জামা-এ-মসজিদ শুভান আল্লাহ্’ ক্যাম্পাসের জায়গায় জায়গায় বিস্ফোরণের ছবি। দেওয়াল এবং মেঝেয় একাধিক গর্ত। মসজিদের তিনটি গম্বুজও ভেঙে পড়েছিল। কোথাও আবার ভেঙে পড়েছিল ছাদের একাংশ।

প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে সরকারি ভাবে জইশ-ই-মহম্মদকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, তা কেবল খাতায়কলমে। পাকিস্তানের এই ক্যাম্পাসে বসে বিনা বাধায় কাজ করত জইশ জঙ্গিরা। ক্যাম্পাসের অদূরেই রয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ক্যান্টনমেন্টও। কয়েকটি সূত্রের দাবি, এই বহওয়ালপুরেই একটি গোপন পরমাণু ঘাঁটি রয়েছে। পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে জঙ্গিদের যোগাযোগ রয়েছে বলেও অনেকে দাবি করেন।

সূত্রের দাবি, ‘জামা-এ-মসজিদ শুভান আল্লাহ্’ মসজিদে মাদ্রাসা জইশ-ই-মহম্মদের তহবিলে চলে। ২০১১ সাল পর্যন্ত এটি একটি সাধারণ ভবন ছিল। ২০১২ সালে একে বৃহৎ প্রশিক্ষণকেন্দ্রে পরিণত করা হয়। এই মাদ্রাসায় ৬০০-র বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে।

১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর কাঠমান্ডু থেকে দিল্লিগামী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান অপহরণ করেছিল পাঁচ হরকত-উল-মুজাহিদিন জঙ্গি। তাতে ১৯০ জন যাত্রী ছিলেন। বিমানটি আফগানিস্তানের কন্দহর দিয়ে ঘোরানো হচ্ছিল। সেই সময় তা অপহরণ করা হয়। ভারত সে সময় মাসুদ আজ়হার, ওমর শেখ এবং মুস্তাক জ়ারগার নামের তিন জঙ্গিকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল। এই মাসুদ ১৯৯৪ সাল থেকে ভারতের জেলে বন্দি ছিলেন। আফগান জঙ্গি সংগঠনের সদস্য ছিলেন তিনি। ভারত মুক্তি দেওয়ার পর ২০০০ সালে তিনিই জইশ-ই-মহম্মদ গঠন করেন। ভারতে একাধিক ছোটবড় সন্ত্রাসবাদী হামলার নেপথ্যে ছিল এই সংগঠন। এ ছাড়া বহওয়ালপুরের কিছু কিছু জায়গায় অপর পাক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লশকর-এ-ত্যায়বার জঙ্গিরাও সক্রিয় বলে অভিযোগ। তাদের সঙ্গেও এই শহরের যোগ রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement