ছোট্ট জ্যাকলিন কালের মৃত্যু ঘিরে আপাতত প্রশ্নের মুখে ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার। ছবি: রয়টার্স।
মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে বাবার হাত ধরে মার্কিন মুলুকে ঢুকেছিল গুয়াতেমালার সাত বছরের মেয়েটি। সঙ্গে ছিলেন বহু শরণার্থী। কিন্তু, এজেন্টদের হাতে নিজেদের সঁপে দেওয়ার আগেই তাঁদেরকে আটক করেন সীমান্তরক্ষীরা। নিয়ে যাওয়া হয় সীমান্তে নজরদারি বাহিনীর শিবিরে। এর দিন দুয়েকের মাথায় মারা যায় মেয়েটি।
সাত বছরের ওই ছোট্ট মেয়ে জ্যাকলিন কালের মৃত্যু ঘিরেই আপাতত প্রশ্নের মুখে ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার। প্রশ্ন উঠছে মার্কিন সরকারের শরণার্থী শিবিরের দুরবস্থা নিয়েও।
অবস্থা সামলাতে অবশ্য কসুর করছে না ট্রাম্প প্রশাসন। ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিওরিটি-র দাবি, মেক্সিকো সীমান্তে আসার সময় দীর্ঘ ক্ষণ না খেয়ে ছিল জ্যাকলিন। খাবার তো দূরের কথা, এক ফোঁটা জলও পেটে পড়েনি তার। সে কারণেই অসুস্থ হয়ে মারা যায় সে। তবে সেই অভিযোগ নস্যাৎ করে জ্যাকলিনের বাবা নেরি কালের পাল্টা দাবি, সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল তাঁর মেয়ে। নেরির আরও দাবি, শিবিরে থাকার সময় তাঁদের খাবার দেওয়া হয়েছিল। ফলে না খেয়ে থাকার জন্য মৃত্যু হয়নি তাঁর মেয়ের। সেই সঙ্গে গোটা ঘটনার নিরপেক্ষ এবং পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছেন নেরি।
(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)
গত ৬ ডিসেম্বর রাচ ১০টা নাগাদবেআইনি ভাবে মার্কিন মুলুকে প্রবেশের সময় নিউ মেক্সিকোর সীমান্তে ১৬৩ জন শরণার্থীকে আটক করেন কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন (সিবিপি)-এর রক্ষীরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন নেরি এবং তাঁর মেয়ে জ্যাকলিন। এর আট ঘণ্টা পরে অসুস্থ বোধ করতে থাকে জ্যাকলিন। তীব্র জ্বর আসে তার। হেলিকপ্টারে করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানেই হার্ট অ্যাটাক হয় জ্যাকলিনের। সিবিপি-র দাবি, প্রাথমিক ভাবে সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠলেও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে মারা যায় সে।
আরও পড়ুন: ক্যানসারের ভুয়ো নথি দেখিয়ে আড়াই কোটি টাকা তুললেন এই মহিলা!
জ্যাকলিনের মৃত্যু নিয়ে অবশ্য অন্তর্তদন্ত শুরু করেছে ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। ট্রাম্প প্রশাসনকে বিঁধতে আসরে নেমে পড়েছে বিরোধীরাও। এ নিয়ে মার্কিন অভিবাসী এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকের দাবি তুলেছেন মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা। পাশাপাশি, গোটা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ দাবি করেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: ভালবাসা মানে কী? উইল স্মিথের ইনস্টাগ্রামে গাঁধী-নেহরু
রাজনীতিকরা ছাড়াও এ নিয়ে ট্রাম্পকে চাপে রেখেছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনরা। টেক্সাসের এল পাসো-র ‘এনানসিয়েশন হাউস’ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা তথা এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টররুবেন গার্সিয়ার দাবি, জ্যাকলিন যে সুস্থ-সবল ছিল, বাবার সঙ্গেই এ দেশে আসতে চেয়েছিল তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেরির। তবে মেয়ের মৃত্যুর কারণ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের অতিরিক্তি কৌতূহলও চাইছেন না নেরি। তা নিয়ে জল্পনার জন্ম হোক, তা-ও চাইছেন না তিনি।
(সব গুরুত্বপূর্ণআন্তর্জাতিক খবরজানতে চোখ রাখুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)