পিঠ ব্লেডে চিরে, নুন ছিটিয়ে, চাবুক মেরে ৫ বছর অত্যাচার জঙ্গিদের

সপাসপ্। সপাসপ্। রবারের চাবুক আছড়ে পড়ছে পিঠে। ব্লেড দিয়ে চিরে দেওয়া হয়েছে পিঠ। রক্ত ঝরছে। আর তার মধ্যে ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে নুনের ছিটে। ছুরি দিয়ে কেটে নেওয়া হয়েছে পিঠের মাংস।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৬ ১৯:৩২
Share:

সেই শাহবাজ তাসির।

সপাসপ্। সপাসপ্।

Advertisement

রবারের চাবুক আছড়ে পড়ছে পিঠে।

ব্লেড দিয়ে চিরে দেওয়া হয়েছে পিঠ। রক্ত ঝরছে। আর তার মধ্যে ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে নুনের ছিটে। ছুরি দিয়ে কেটে নেওয়া হয়েছে পিঠের মাংস।

Advertisement

অসহ্য যন্ত্রণায় চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসছে। কিন্তু কোনও আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে না। কারণ, মুখটা সেলাই করে দেওয়া হয়েছে। বড় ছুঁচ ফুটিয়ে। হাত আর পা দু’টো বেঁধে দেওয়া হয়েছে মোটা দড়ি দিয়ে। ফাঁসি কাঠে ঝোলানোর সময় যে ভাবে আসামির হাত, পা দু’টো বেঁধে দেওয়া হয়। হাত-পায়ের নখ উপড়ে নেওয়া হয়। টানা এক সপ্তাহ জলটুকুও খেতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। পায়ে গুলিও করা হয়েছিল।

একটা-দু’টো দিন নয়। এক নাগাড়ে এই ভাবে পাঁচ-পাঁচটা বছর ধরে চালানো হয়েছে অত্যাচার।

আর তার পরেও যেটা অসম্ভবই মনে হয়েছিল, সেই অত্যাচারের হাত থেকে এক দিন তার নিষ্কৃতি মিলে যায়। তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

শাহবাজ তাসিরের কথা বলছি। মুসলিম জঙ্গিদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন যাঁর বাবাও, পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের গভর্নর থাকার সময়ে। শাহবাজের জন্ম যেখানে, সেই লাহৌর থেকে তাঁকে ২০১১ সালে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল ‘আল-কায়েদা’র ঘনিষ্ঠ ‘ইসলামিক মুভমেন্ট অফ উজবেকিস্তান’-এর জঙ্গিরা। ২০১৪-য় করাচি বিমানবন্দরে হামলা সহ পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি জায়গায় জঙ্গি হামলার ঘটনায় যারা জড়িত।

আরও পড়ুন- মৃতদেহের সঙ্গে যৌনতাই ছিল যাঁর অন্যতম নেশা!

তাসির নিজেই জানিয়েছেন, গত পাঁচ বছর ধরে তাঁকে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল পাকিস্তানের উপজাতি অধ্যুষিত বেশ কয়েকটি এলাকা আর আফগানিস্তানে। এই সদ্য ফেলে আসা মার্চেই ইসলামিক জঙ্গিদের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছেন তাসির। বলেছেন, তাঁর ওপর অত্যাচারের ছবি তুলে তার ভিডিও রেকর্ডিং নিয়মিত পাঠানো হোত তাঁর পরিবারের সদস্যদের হাতে। যাতে তাঁদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যায়। আর তাঁদের মাধ্যমে পাক সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যায়।

ওই জঙ্গিদের ডেরায় কাটানো তাঁর দিনগুলোয় একটাই ‘সুখ-স্মৃতি’ রয়েছে তাসিরের। তাঁকে যে ঘরে আটকে রাখা রাখা হয়েছিল, তার রক্ষীর সঙ্গে তাসিরের সামান্য কয়েক দিনের ‘স্বার্থান্বেষী’ সখ্যতা। বা, তার উল্টোটা। তাসিরের মতো সেই রক্ষীও ছিল খেলা-পাগল মানুষ। আর সেও ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সমর্থক। দু’জনে একই সঙ্গে রেডিওয় ম্যানচেস্টারের খেলার ধারাবিবরণী শুনত। তার জন্য যে তাসিরকে পরে খুব একটা সাহায্য করেছে ওই রক্ষী, তা নয়। তা হলে তো তারই মুণ্ডু উড়ে যেত!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement