নীলকণ্ঠ হলেন নাজিহ, প্রমাণ করলেন ইসলামের মুখ তিনিই

নাজিহ শাকিরকে আমরা কেউ চিনতাম না। খুব বিখ্যাত মানুষ ছিলেন, তেমন নয়। কিন্তু এখন গোটা পৃথিবী তাঁকে চিনে গেল। আর তিনি চেনালেন গোটা পৃথিবীকে, ধর্মের মুখটা আসলে কেমন হয়।

Advertisement

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৬ ০০:০২
Share:

নিহতদের স্মরণে। বাগদাদে এফপির তোলা ছবি।

নাজিহ শাকিরকে আমরা কেউ চিনতাম না। খুব বিখ্যাত মানুষ ছিলেন, তেমন নয়। কিন্তু এখন গোটা পৃথিবী তাঁকে চিনে গেল। আর তিনি চেনালেন গোটা পৃথিবীকে, ধর্মের মুখটা আসলে কেমন হয়।

Advertisement

ধর্মের নামে যা চলে, যা চলছে সম্প্রতি, তা যে আসলে ধর্ম নয়, তা সাধারণ বোধ সম্পন্ন মানুষকে বুঝিয়ে দিতে হয় না সম্ভবত। ধর্মকে কেন্দ্র করে যত হানাহানি, তার মূলে এক ধূম্রজাল। এক দল সুযোগসন্ধানী, ক্ষমতালোভী দুর্বৃত্ত ধর্মের নামে রোজ ফালা ফালা করছে বিশ্ব মানবতাকে। ধর্মের নামে তারাই ওই ধূম্রজালটা বোনে, তারাই বাষ্পাচ্ছন্ন করে রাখে ধর্মের ধারণাকে। ধর্ম-অধর্মের সীমারেখাটা অস্পষ্ট করার চেষ্টা থাকে যেন। সেই ধোঁয়াশার আড়ালকে ব্যবহার করে তারা হিংসা ছড়ায়, বিদ্বেষ ছড়ায়, ছড়ায় রক্ত।

ধর্ম যে আসলে তা নয়, নাজিহ শাকির তা বোঝালেন। ইরাকের এক সুপ্রাচীন মজসিদে সমাগমের মাঝে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য উপাসনাস্থলের দরজা পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল আইএস জঙ্গি। নাজিহ বুঝতে পেরেছিলেন বিস্ফোরণ ঘটবেই। তাই নিজের প্রাণ বাজি রেখে শেষ চেষ্টা করলেন একটা। সমুদ্র মন্থনের সমস্ত বিষ ধারণ করে শিব যেমন নীলকণ্ঠ হয়েছিলেন, নাজিহ শাকির তেমনই বিস্ফোরণের অভিঘাত নিজের শরীরে শুষে নিতে চাইলেন। বিস্ফোরণের আগের মুহূর্তে তিনি কঠিন আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে নিয়েছিলেন আত্মঘাতী জঙ্গিকে। ধর্ম আলিঙ্গন করে নিয়েছিল অধর্মকে।

Advertisement

নাজিহ শাকিরের শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলেও বেঁচে গেল অন্য অনেক প্রাণ। আর তত ক্ষণে নাজিহ শাকির বুঝিয়ে দিলেন দুর্বৃত্তের তৈরি করা ধূম্রজালটা আসলে অধর্ম। ওই এক আলিঙ্গন বুঝিয়ে দিল, ধর্ম শান্তির জন্য, সুস্থিতির জন্য, নিবেদনের জন্য, ভালবাসতে শেখার জন্য, নীতিবোধের জন্য, মানবজাতির সুরক্ষার জন্য। বুঝিয়ে দিল, ইসলাম অথবা যে কোনও ধর্মই মানবজাতির কল্যাণার্থে। ধ্বংস আর মৃত্যুর নাম কখনও ধর্ম হতে পারে না।

নাজিহ শাকির প্রমাণ করলেন, ধর্মের মুখ তিনিই, কোনও স্বঘোষিত খলিফা নন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন