Pakistan

সন্ত্রাস দমনে সর্বাত্মক লড়াই, শাহবাজের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত পাক জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির

পাক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন আফগানিস্তান লাগোয়া দুই প্রদেশ, খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তানে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির ধারাহবাহিক হামলার জেরেই এই পদক্ষেপ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:২৬
Share:

সন্ত্রাস দমনে সর্বাত্মক লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের। ফাইল চিত্র।

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিল পাকিস্তান। শুক্রবার সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের উপস্থিতিতে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি (ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিটি বা এনএসসি) বৈঠকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘এনএসসির ৪১তম বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, সচিব, গোয়েন্দা আধিকারিক এবং সামরিক ও অসামরিক নিরাপত্তা আধিকারিকেরা হাজির ছিলেন। পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাসবাদের শিকড় উপড়ে ফেলতে সর্বাত্মক এবং নিরবচ্ছিন্ন অভিযানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’

Advertisement

পাক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন আফগানিস্তান লাগোয়া দুই প্রদেশ, খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তানে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির ধারাবাহিক হামলার জেরেই ইসলামাবাদের এই পদক্ষেপ। প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বরে খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশে সক্রিয় তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)গোষ্ঠীর সঙ্গে পাক সরকারের শান্তিবৈঠক ভেস্তে যায়। তার পর থেকেই ধারাবাহিক ভাবে ওই এলাকায় টিটিপি বিরোধী অভিযান চালাচ্ছে পাক সেনা। জবাবে সেনা এবং অসামরিক নিশানার উপর হামলা চালাচ্ছে টিটিপিও।

টিটিপি দমন অভিযানে গিয়ে পাক সেনা সীমান্ত লঙ্ঘন করছে বলেও আফগানিস্তানের শাসক তালিবানের তরফে অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে কয়েক বার দু’দেশের সেনা সীমান্ত সংঘর্ষেও জড়িয়েছে। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের উত্তর এবং দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে কার্যত একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ রয়েছে টিটিপির। বালুচিস্তান প্রদেশের উত্তরাংশেও তাদের প্রভাব রয়েছে। আফগানিস্তানের খোস্ত ও কুনার প্রদেশে প্রশিক্ষণ শিবির রয়েছে এই গোষ্ঠীর। আমেরিকায় ড্রোন হামলায় নিহত জঙ্গিনেতা বায়তুল্লা মেহসুদ প্রতিষ্ঠিত টিটিপি বরাবরই পাক সরকারের বিরোধী।

Advertisement

২০১৪ সালে পেশোয়ারের একটি স্কুলে হামলা চালিয়ে শতাধিক পড়ুয়াকে খুন করেছিল টিটিপি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে খাইবার পাখতুনখোয়ার রাজধানী পেশোয়ারের পুলিশ লাইনে তাদের হামলার বলি হয়েছেন ৮৪ জন। ওই ঘটনার পরেই এনএসসির বৈঠকে টিটিপিকে ধ্বংস করার জন্য ধারাবাহিক অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে ২০০৯ সালে টিটিপি-র বিরুদ্ধে ‘অপারেশন রাহ-ই-নিজত’ চালিয়েছিল পাক সেনা। কিন্তু সেই অভিযানে প্রত্যাশিত সাফল্য মেলেনি।

অন্য দিকে, ‘বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি’ (বিএলএ), ‘বালুচ ন্যাশনালিস্ট আর্মি’ (বিএনএ)-র মতো স্বাধীনতাপন্থী বালুচ গোষ্ঠীগুলি দীর্ঘ কয়েক দশক ধরেই পাক সরকারের মাথাব্যথার কারণ। সাম্প্রতিককালে বেশ কয়েক বার সশস্ত্র বালুচেরা ১৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর’ (সিপিইসি)-র উপর হামলা চালিয়েছে। ধ্বংস করেছে তেলের পাইপলাইন। সিপিইসি পাক অর্থনীতির অন্যতম মেরুদণ্ড বলে পরিচিত। পশ্চিম চিনের শিনজিয়াং প্রদেশের কাশগড় থেকে শুরু হওয়া ওই রাস্তা কারাকোরাম পেরিয়ে ঢুকেছে পাকিস্তানে। শেষ হয়েছে বালুচিস্তান প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে চিন নিয়ন্ত্রিত গ্বদর বন্দরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন