International news

অসুস্থ স্ত্রীর মাথায় হাত বোলাচ্ছেন নওয়াজ, আবেগে ভাসল পাকিস্তান

আর কিছু পরেই রওনা দিতে হবে জেলের উদ্দেশে। অসুস্থ, শয্যাশায়ী স্ত্রীকে হাসপাতালের বিছানায় ফেলে উড়ে যেতে হবে পাকিস্তানে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লাহৌর শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৮ ১৪:১৯
Share:

এই ছবিটি ঘিরেই চর্চা শুরু হয়েছে পাকিস্তানে। ছবি: টুইটার থেকে।

একটি ছবিই বদলে দিল নওয়াজ়ের ভাবমূর্তি!

Advertisement

আর কিছু পরেই রওনা দিতে হবে জেলের উদ্দেশে। অসুস্থ, শয্যাশায়ী স্ত্রীকে হাসপাতালের বিছানায় ফেলে উড়ে যেতে হবে পাকিস্তানে। দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা! ওড়ার আগে শেষ বারের মতো হাসপাতালে শয্যাশায়ী স্ত্রীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন নওয়াজ়। পাশে দাঁড়িয়ে এক হাতে মুখ ঢেকে কাঁদছেন মেয়ে মরিয়ম। অন্য হাত আলতো করে ছুঁয়ে রয়েছে মায়ের পা।

শুক্রবার লন্ডন থেকে বিমানে পাকিস্তান রওনা দেওয়ার আগে মেয়ে মরিয়মকে সঙ্গে নিয়ে লন্ডনের হার্লে স্ট্রিট ক্লিনিকে যান তিনি। সেখানেই লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসা চলছে স্ত্রী কুলসুম শরিফের। স্ত্রীর কেবিনে কিছু ক্ষণ কাটান তাঁরা। কেবিনে উপস্থিত এক পাক সাংবাদিক তখন এ রকমই এক আবেগাপ্লুত মুহূর্তেরই ছবি ক্যামেরাবন্দি করে টুইট করেন। ক্যাপশনে লেখেন, ‘সুদূর ভবিষ্যতেও অনেকের মনে রয়ে যাবে এই ছবিটা’। কিছু ক্ষণের মধ্যে সেটা রি-টুইটও করেন নওয়াজ-কন্যা। আর একটি ছবিই যেন পাক নাগরিকদের মনে নওয়াজের ভাবমূর্তি অনেকটাই বদলে দিল।

Advertisement

আবেগে ভেসে নওয়াজের পক্ষে অনেকেই গলা মেলালেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন পাক-সরকারকে। আগামী ১০০ বছর এই ছবিটাই পাকিস্তানের সবচেয়ে কুৎসিত মুখ হিসাবে মনে থাকবে, লেখা হয় টুইটারে। তাতে দোসর লন্ডনের দলীয় সভায় তাঁর ইমোশনাল স্পিচ। তাতে তিনি সাফ জানিয়েছিলেন, স্ত্রীকে ছেড়ে আসা সহজ নয়, কিন্তু দেশের জন্য এই আত্মত্যাগ তাঁকে করতেই হবে। তিনি বলেছিলেন, ‘‘মরিয়ম এবং আমি জেলে যাওয়ার জন্যই দেশে ফিরছি। তাঁরা আমাকে ফাঁসিকাঠেও চড়াতে পারেন। কিন্তু খুব ভাল করে জানি, আত্মত্যাগ ছাড়া স্বাধীনতা আনা যায় না। হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে স্ত্রীকে ছেড়ে আসাও সোজা নয়। কিন্তু দেশকে দাসত্ব থেকে মুক্ত করতে আমি আর আমার মেয়ে ফিরছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সারা জীবন জেলে ঢুকিয়ে দিন বা ফাঁসিকাঠে ঝোলান, কিন্তু পাকিস্তানের মানুষের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত ওঁরা চুপ করবে না।’’ সেই সভায় উপস্থিতেরা চিৎকার করেন, ‘‘নওয়াজ় শরিফ, আমরা তোমাকে ভালবাসি।’’

শুক্রবার রাতে লাহৌরে ফেরেন সকন্যা নওয়াজ়। ওই রাতে তাঁদের দু’জনকে পানামা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার করা হয়। রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে রয়েছেন তাঁরা। সূত্রের খবর, সেখানে ‘বি’ ক্লাস সুবিধা পাচ্ছেন তিনি। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জেলের ঘরে টিভিও রয়েছে।

আরও পড়ুন: দেশে ফিরেই জেলের পথে নওয়াজ়-মরিয়ম

সাধারণত যে সমস্ত বন্দির আলাদা সোশ্যাল স্ট্যাটাস রয়েছে, যাঁরা খুবই শিক্ষিত অথবা ধনী জীবনযাপনে অভ্যস্ত, তাঁদেরই ‘বি’ ক্লাস সুবিধা দেওয়া হয় পাকিস্তানে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন