নওয়াজ শরিফ
পশ্চিম এশিয়ার সঙ্কট কাটাতে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিল পাকিস্তান। কাতার সমস্যায় এ ভাবে সক্রিয় হয়ে পাকিস্তান আমেরিকাকেও বার্তা দিতে চাইছে বলে ধারণা ভারতীয় কূটনীতিকদের।
সুন্নি দেশ হিসেবে সব আরব রাষ্ট্রের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রাখতে চায় পাকিস্তান। ফলে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগে সৌদি আরব-সহ সাতটি দেশ কাতারকে একঘরে করার পরে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছিল তারা। তুরস্কের পাশাপাশি পাকিস্তানও কাতারে সেনা পাঠাচ্ছে বলে সম্প্রতি দাবি করে পশ্চিম এশিয়ার একাধিক সংবাদমাধ্যম। সঙ্গে সঙ্গে ইসলামাবাদ জানায়, তাদের এমন কোনও পরিকল্পনা নেই। আরব দুনিয়ার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নষ্ট করে দিতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
এখন পশ্চিম এশিয়ার সঙ্কট নিয়ে সমাধানসূত্র খুঁজতে সফরে গিয়েছেন খোদ পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তাঁর সঙ্গে রয়েছেন পাক সেনাপ্রধান কমর বাজওয়াও। একটি পাক সংবাদপত্রের দাবি, শরিফের সঙ্গে বৈঠকের সময়ে সৌদি রাজা সলমন সরাসরি প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনারা আমাদের সঙ্গে রয়েছেন না কাতারের পাশে?’’ শরিফ জবাবে বলেন, ‘‘এই বিবাদে কোনও পক্ষের সঙ্গে হাত মেলানো পাকিস্তানের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে সঙ্কট মেটাতে আমরা কাতারের সঙ্গে আলোচনা করতে পারি।’’ বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য শরিফ কাতার, কুয়েত ও তুরস্কেও যাবেন বলে জানিয়েছে সংবাদপত্রটি।
গোড়া থেকেই কাতার পরিস্থিতির উপরে সতর্ক নজর রাখছে দিল্লি। সঙ্কট মেটাতে দৌত্যও চালাচ্ছে ভারত। সাউথ ব্লক সূত্রের মতে, মার্কিন চাপেই যে কাতারকে একঘরে করা হয়েছে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সঙ্কটে সদর্থক ভূমিকা নিয়ে পাকিস্তান আসলে আমেরিকাকেই বার্তা দিতে চাইছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার ক্ষেত্রে পাক ভূমিকাকে বার বার নানা মঞ্চে তুলে ধরছে দিল্লি। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনকেও এ নিয়ে একাধিক বার বার্তা দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। তাই পশ্চিম এশিয়ার সঙ্কটকে কাজে লাগিয়ে শরিফ ওয়াশিংটনের ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছেন।
কাতার সঙ্কট মেটার কোনও লক্ষণ অবশ্য এখনও দেখা যায়নি। বরং আজ পূর্ব আফ্রিকার জিবৌতি ও ইরিট্রিয়ার সীমান্ত থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে কাতার। ওই দুই দেশের বিবাদ মেটাতে মধ্যস্থতা করেছিলেন কাতারের আমির। সমঝোতার শর্ত হিসেবেই সেখানে কাতারি সেনা মোতায়েন করা হয়। কিন্তু এখন সৌদি আগ্রাসনের ভয়েই সেই সেনাদের দেশে ফেরানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পশ্চিম এশিয়ার সঙ্কট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জও।