ওসমান হাদির মৃত্যুর পরে বিশৃঙ্খলা বাংলাদেশে। — ফাইল চিত্র।
ওসমান হাদির পরে আরও এক জন। এ বার বাংলাদেশের খুলনায় নাহিদ ইসলামের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র এক নেতাকে গুলি করার অভিযোগ উঠল। সোমবার ১২টা নাগাদ সোনাডাঙার একটি বাড়িতে ঢুকে এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা মহম্মদ মোতালেব শিকদারকে গুলি করা হয়। তিনি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। দলীয় সূত্রে খবর, কিছু দিনের মধ্যেই খুলনায় এনসিপির শ্রমিক সংগঠনের একটি সমাবেশ হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে এই ঘটনা।
গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় গুলি করা হয় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক হাদিকে। ১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের এক হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। সেই থেকে বাংলাদেশ উত্তপ্ত। এই আবহে সোমবার খুলনায় মোতালেবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার অভিযোগ উঠল। এনসিপির খুলনার সংগঠক সইফ নেওয়াজ ‘প্রথম আলো’-কে জানান, মোতালেব দলের খুলনা বিভাগীয় আহ্বায়ক। দলেরই শ্রমিক সংগঠন জাতীয় শ্রমিক শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক।
সোনাডাঙা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) অনিমেষ মণ্ডল ‘প্রথম আলো’-কে জানিয়েছেন, মোতালেবকে গুলি করে কয়েক জন দুষ্কৃতী। তার পরে তাঁকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁর মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যান করানোর জন্য অন্য একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গত বছর বাংলাদেশে গণআন্দোলনের অন্যতম মুখ ছিলেন নাহিদ। সেই নাহিদের দল আসন্ন ভোটে লড়ার কথাও জানিয়েছে। এ বার আক্রান্ত তাঁর দলের এক নেতা।
গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন হাদি। তাঁকে সরকারি উদ্যোগে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সিঙ্গাপুরে। ছ’দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। তার পর থেকে বাংলাদেশ জুড়ে নতুন করে অশান্তি শুরু হয়েছে। হাদির হত্যাকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশের পুলিশ। তাঁদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত ফয়সালের পরিবারের সদস্যেরাও রয়েছেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে নির্বিঘ্নে ভোট হওয়া নিয়ে আবার প্রশ্ন উঠেছে। নির্বাচনী আধিকারিক এবং প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনও। এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু বলা না-হলেও কমিশনের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশের সংবাদপত্র ‘কালের কণ্ঠ’ এমনটাই জানিয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন একই সঙ্গে হবে জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট। গত ১২ ডিসেম্বর থেকেই মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরু হয়েছে। চলবে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই আবহে খুন হন হাদি। এ বার এনসিপি নেতাকে লক্ষ্য করে ছোড়া হল গুলি। তার পরেই আবার প্রশ্ন উঠল, দেশে রাজনীতিকদের নিরাপত্তা কোথায়? নির্বিঘ্নে ভোট করানোও কি সম্ভব?