জিওয়ানি সৈকত। ছবি: সংগৃহীত।
আফগানিস্তান, ইরান ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে বাণিজ্য-সম্পর্ক জোরদার করতে ইরানের ছাবাহারে যেখানে সমুদ্রবন্দর বানাচ্ছে ভারত, তার খুব কাছেই পাকিস্তানের জিওয়ানিতে একটি পাক বন্দরকে তাদের সামরিক ঘাঁটি বানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে চিন। ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’কে উদ্ধৃত করে করা একটি রিপোর্টে এমনই দাবি করেছে চিনের সরকারি সংবাদপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’।
ওমান উপসাগরের খুব কাছে থাকা জিওয়ানি বন্দরটি পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশের গ্বাদর থেকে খুব দূরে নয়। জিওয়ানি সমুদ্রবন্দরে বহু দিন ধরেই রয়েছে পাকিস্তানের একটি সামরিক ঘাঁটি।
চিনের সরকারি সংবাদপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’-এর একটি রিপোর্টে মার্কিন দৈনিক ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’কে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ইরানের ছাবাহারে নয়াদিল্লির টাকায় বানানো সমুদ্রবন্দরের ওপর নজরদারির জন্য জিওয়ানির পাক সামরিক ঘাঁটিটি ব্যবহার করতে পারে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)।
মার্কিন দৈনিক ও চিনা সংবাদপত্রের রিপোর্টে বলা হয়েছে, নববর্ষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইসলামাবাদকে খোঁচা দেওয়া টুইট ও তার পর পাকিস্তানকে একাধিক অনুদান বন্ধ করে দেওয়ার ওয়াশিংটনের সিদ্ধান্তের ফলে পাকিস্তান আরও বেশি করে ঢলে পড়তে পারে চিনের দিকে। তার ফলে, ছাবাহার সমুদ্রবন্দরের উপর নজর রাখতে জিওয়ানির পাক সামরিক ঘাঁটিটি চিনকে ব্যবহার করতে পারে পাকিস্তান।
আরও পড়ুন- মোদীর সংস্কারে কুপোকাত বৃদ্ধি
আরও পড়ুন- ১১৫ কোটির মার্কিন অনুদান হারাল পাকিস্তান
সেই রিপোর্ট জানাচ্ছে, আমেরিকা পাশ থেকে সরে যাওয়ার জোরালো ইঙ্গিত দেওয়ায় চিনের মতো একটি শক্তিশালী দেশকে যে তার আরও বেশি প্রয়োজন, তা বোঝাতে আগামী দিনে বেজিং ও ইসলামাবাদের মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরও জোরদার হয়ে উঠবে। জিওয়ানির বন্দরটি যদি পাক সেনাবাহিনীর কাছ থেকে ছাবাহারে নজরদারির জন্য পিএলএ নিয়ে নেয়, তা হলে তা দু’দেশের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার হয়ে ওঠার প্রথম জোরালো ইঙ্গিত হবে।
‘গ্লোবাল টাইমস’-এর রিপোর্ট বলছে, অর্থনীতির ক্ষেত্রে চিন ও পাকিস্তানের সেই সম্পর্ক জোরদার হয়ে ওঠার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে চিনা মুদ্রা ইউয়ানকে পাকিস্তানে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে আগেই। পাকিস্তানের মধ্যে দিয়ে চিন যে অর্থনৈতিক করিডরটি (চিন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর বা ‘সিপিইসি’) বানাচ্ছে, তাতে বেজিং ইতিমধ্যেই আরও অর্থ বিনিয়োগ করেছে। ইসলামাবাদও সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই খরচ চালাতে চিনা মুদ্রা অবাধে ঢুকতে পারবে পাকিস্তানে।
দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘‘পাকিস্তানে যৌথ নৌ ও বায়ুসেনা ঘাঁটি বানাতে বিশেষ সময় লাগবে না চিনের। তবে এই মুহূর্তে তার প্রয়োজন নেই।’’