খাঁ-খাঁ: নাইজিরিয়ার এই স্কুলে হানা দিয়েই ছাত্রীদের অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে জঙ্গিরা। ছবি: রয়টার্স।
কেউ বলছেন ১০০ জন, কারও মতে তা অন্তত ১১১। সোমবার নাইজিরিয়ার ইয়োবে প্রদেশের দাপচিতে একটি স্কুলে হানা দিয়ে ওই ছাত্রীদের অপহরণ করে নিয়ে যায় বোকো হারাম জঙ্গিরা।
সেই ঘটনার পাঁচ দিনে পরেও কোনও কিনারা করতে না পেরে শুক্রবার একে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ বলে ঘোষণা করেছেন নাইজিরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহম্মদ বুহারি।
পাশাপাশি অপহৃত প়ড়ুয়াদের খুঁজে বার করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বুহারি এ দিন বলেছেন, ‘‘হারানো মেয়েদের খোঁজে আরও সেনা পাঠানো হচ্ছে। আশপাশের এলাকার উপরে ২৪ ঘণ্টা নজর রাখতে পাঠানো হচ্ছে বিমান।’’
ছাত্রী অপহরণের ঘটনা নাইজিরিয়ায় প্রথম নয়। ২০১৪ সালে মেয়েদের এক স্কুলে হানা দিয়ে অন্তত ২০০ জন চিবক সম্প্রদায়ের স্কুলপড়ুয়াকে অপহরণ করেছিল বোকো হারাম জঙ্গিরা। বছর ঘুরলেও খোঁজ মেলেনি অধিকাংশের। তাঁদের যৌনদাসী বানিয়ে, মানববোমা হিসেবে ব্যবহার করে একের পর এক হামলা চালিয়ে গিয়েছে জঙ্গিরা। সেখান থেকে পালিয়ে আসা অল্প কিছু ছাত্রীর বয়ানে জানা গিয়েছে বন্দি মেয়েদের ভয়ঙ্কর জীবনের কথা।
২০১৫ সালে বোকো হারাম জঙ্গিদের নিশ্চিহ্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ভোটে জিতেছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট বুহারি। দেশে পরবর্তী প্রেসিডেন্সিয়াল ভোট ২০১৯-এ। সাধারণ নির্বাচনও ওই একই বছরে। তবে বোকো হারাম প্রসঙ্গে ক্ষোভে ফুঁসতে থাকা নাইজিরিয়ায় বুহারি ফের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়বেন কি না তা নিয়ে সন্দিহান দলের একাংশ। অপহৃতদের উদ্ধারের দাবিতে এখন ক্ষোভে ফুঁসছে দেশ। বিক্ষোভ শুরু হয়েছে জায়গায় জায়গায়।
২০০৯ সালে স্বাধীন প্রদেশের দাবিতে আত্মপ্রকাশ করে ইসলামিক সংগঠন বোকো হারাম। অল্প দিনেই তা জঙ্গি রূপ নেয়। অভিযোগ, সোমবার ইয়োবে প্রদেশের প্রত্যন্ত দাপচি গ্রামে হানা দিয়ে যখন জঙ্গিরা মেয়েদের উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, এলাকা ছিল কার্যত পুলিশহীন। অপহৃতাদের মধ্যে অনেকে নেহাত শিশু। স্কুলের তরফে ১০৫ জন নিখোঁজ ছাত্রীর তালিকা তৈরি করা হয়েছে। অপহৃতাদের সংখ্যা নিয়ে ধন্দ থাকলেও তা শতাধিক না হলে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ ঘোষণা করা হত না বলেই মনে করছেন অনেকে। প্রশাসন জানিয়েছে, বেছে বেছে এই রকম দুর্গম এলাকাতেই আক্রমণ করে জঙ্গিরা। সেখানকার অধিবাসীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন।