‘নয়া’ পাকিস্তান তৈরি হবে মুশারফ কাঠগড়ায় দাঁড়ালে

নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও নতুন নয়। নতুন হল, দল নির্বিশেষেই একই অভিযোগ উঠছে। শাহবাজ় শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ় (পিএমএল-এন) এবং বেনজ়ির ভুট্টোর ছেলে বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি), দু’দলেরই এক সুর।

Advertisement

মেহর তারর (সাংবাদিক ও লেখিকা)

লাহৌর শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৮ ০৩:৫৪
Share:

মেহর তারর।

প্রাক-নির্বাচনী রিগিংয়ের অভিযোগ, বিচারবিভাগের সঙ্গে সরকারি প্রতিষ্ঠানের অশুভ আঁতাঁতের অভিযোগ, দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তিন বারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ় শরিফের জেল এবং একাধিক বড় মাপের জঙ্গি হামলা— এগুলোই এ বার পাকিস্তান ভোটের খণ্ডচিত্র।

Advertisement

প্রাক-নির্বাচনের অভিযোগ এ দেশে আগেও শোনা গিয়েছে। নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও নতুন নয়। নতুন হল, দল নির্বিশেষেই একই অভিযোগ উঠছে। শাহবাজ় শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ় (পিএমএল-এন) এবং বেনজ়ির ভুট্টোর ছেলে বিলাবল ভুট্টো জ়ারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি), দু’দলেরই এক সুর। তাদের সঙ্গে গলা মিলিয়েছে ছোট-মেজ নানা দল। ব্যতিক্রম শুধু ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফ!

এ বার পিএমএল-এন এবং পিপিপি যা বলছে, এর আগের নির্বাচনে, অর্থাৎ ২০১৩ সালে, ঠিক একই কথা বলেছিলেন ইমরান খান। জনমত সমীক্ষা বলছে, শাহবাজ় ও বিলাবলদের অবস্থা এ বার বেশ করুণ। এবং যখন যে দল রাজনৈতিক গুরুত্ব হারায়, তারাই অন্য দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনে। আগে এই অভিযোগ আনতেন ইমরান স্বয়ং। কিন্তু এ বার ছবিটা পাল্টেছে। তাঁর জমি অনেক শক্ত। অনেকেই ভবিষ্যদ্বাণী শুরু করেছেন, ইমরানই হচ্ছেন আমাদের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

নির্বাচনী হোর্ডিংয়ে মুখ ঢেকেছে শহরের রাস্তার। ছবি: এএফপি।

সাধারণত, পঞ্জাব প্রদেশ যে দলের দখলে থাকে, তারাই পাক পার্লামেন্ট দখল করে। এ বারও পঞ্জাবের ভোটব্যাঙ্কের একটা বিশাল অংশ পিএমএল-এনের দখলে যাবেই বলে মনে হয়। তবে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের গুরুত্ব যে কমছে, এ কথা মানতেই হবে। ভোটের ঠিক মুখেই শরিফদের কারাদণ্ড ঘোষণার মধ্যে চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছেন নওয়াজ়-পন্থীরা। কিন্তু দুর্নীতি যে দলটির রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গিয়েছে, তা স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরাও। আর শরিফ-বিরোধীরা বলছেন, যিনি দুর্নীতিতে অভিযুক্ত, তিনি জেলে গিয়েছেন বলেই তাঁকে ‘রাজনৈতিক শহিদ’-এর মর্যাদা দেওয়ার কোনও অর্থ হয় না।

১৩ জুলাই এমিরেটসের উড়ানে চেপে লন্ডন থেকে পাকিস্তানে ফিরেছিলেন সকন্যা নওয়াজ় শরিফ। বিমানবন্দর থেকেই সোজা জেলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কোনও এক দিন এমিরেটসের কোনও উড়ানে চড়ে কি দেশে ফিরবেন আর এক অভিযুক্ত, প্রাক্তন সেনানায়ক এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট পারভেজ় মুশারফ? তার পর তাঁকেও যেতে হবে জেলে?

তা হলে সত্যিই সে দিন তৈরি হবে এক ‘নয়া’ পাকিস্তান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন