পার্লামেন্টে ভোট ছাড়া ব্রেক্সিট নয়, কোর্টে ধাক্কা সরকারের

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছেদের প্রশ্নে আদালতে জোর ধাক্কা খেল টেরেসা মে-র সরকার। পার্লামেন্টে ভোটাভুটি ছাড়া কোনও মতেই ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে না— জানিয়ে দিল ইংল্যান্ডের হাইকোর্ট!

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:০১
Share:

ইংল্যান্ডের হাইকোর্ট।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছেদের প্রশ্নে আদালতে জোর ধাক্কা খেল টেরেসা মে-র সরকার। পার্লামেন্টে ভোটাভুটি ছাড়া কোনও মতেই ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে না— জানিয়ে দিল ইংল্যান্ডের হাইকোর্ট!

Advertisement

গত জুনে এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছেদে সিলমোহর দিয়েছিল ব্রিটেন।

জনমত মাথা পেতে নিয়ে ইস্তফা দেন ব্রেক্সিট-বিরোধী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। মসনদে বসেই টেরেসা বলেছিলেন, লিসবন চুক্তির ৫০ নম্বর ধারা অনুসারে ব্রাসেলস (ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দফতর)-এর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ভাবে ব্রেক্সিট-আলোচনা শুরু করবেন ২০১৭ সালের মার্চের শেষ থেকেই।

Advertisement

পার্লামেন্টের সম্মতি ছাড়াই ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য টেরেসা মে-র সরকার এত দিন ‘রয়্যাল প্রেরোগেটিভ’ নামে একটি আইনের আশ্রয় নিয়েছিল। যে আইনের সাহায্যে, রানির অনুমতি নিয়ে, পার্লামেন্টকে পাশ কাটিয়েই লিসবন চুক্তির ৫০ নম্বর ধারা চালু করবে সরকার, ব্রেক্সিট নিয়ে কথাবার্তা চালাতে পারবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে। সরকারের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছিলেন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার জিনা মিলার-সহ বেশ কয়েক জন ব্রেক্সিট বিরোধী আন্দোলনকারী। সেই মামলাতেই আজ রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।

এ দিন লন্ডনের হাইকোর্টের তিন বিচারপতি বলেন, ‘‘রানির অধিকারের আওতায় এই প্রক্রিয়া শুরু করার ক্ষমতা সরকারের নেই।’’ বিচারপতিদের মতে, স্রেফ ‘আইনি জটিলতার’ জন্য লিসবন চুক্তির আর্টিকল-৫০ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কথাবার্তা পার্লামেন্টকে টপকে শুরু করতে পারবে না সরকার।

সরকার অবশ্য ব্রেক্সিট প্রশ্নে জমি ছাড়তে নারাজ। এ দিন প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, ‘‘এই রায়ের ফলে ব্রেক্সিট নিয়ে আমাদের নির্ধারিত সময়সূচি থেকে সরে আসার কোনও প্রশ্নই নেই।’’ কয়েক দিনের মধ্যেই এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবে সরকার।

সরকার পিছু হটতে নারাজ, তবু এই রায়ে জনমানসে ব্রেক্সিট নিয়ে ফের অনিশ্চয়তা দানা বাঁধতে শুরু করেছে। আইনি মারপ্যাঁচে আটকে গেলে এই প্রক্রিয়া শুরু এবং কার্যকর হতে অনেক সময় লেগে যাবে। লন্ডনের শ্রমিক নেতা জেরেমি করবিন অবশ্য বলছেন, ‘‘যত দ্রুত সম্ভব পার্লামেন্টে এই নিয়ে কথা বলা হোক। ব্রেক্সিটের প্রশ্নে স্বচ্ছ্বতা খুবই জরুরি। ব্রিটেনের মানুষ ব্রেক্সিটের পক্ষে রায় দিয়েছেন। আশা রাখি, পার্লামেন্ট সেই রায়কে সম্মান জানাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন