মার্কিন প্রতিরক্ষাসচিব জিম ম্যাটিস
এক দিন নরম, তো এক দিন গরম। উত্তর কোরিয়া নিয়ে আমেরিকার সুর ইদানীং ওঠানামা করছে এ ভাবেই।
আগামী ১২ জুন সিঙ্গাপুরে উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের সঙ্গে তাঁর বৈঠক যে শেষ পর্যন্ত হচ্ছেই, তা দু’দিন আগেই জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই ঘোষণা দু’তরফেই খানিকটা স্বস্তির হাওয়া এনেছিল। তবু কাঁটা রয়েই গেল। রবিবার সিঙ্গাপুরে শাংগ্রি-লা বৈঠকে মার্কিন প্রতিরক্ষাসচিব জিম ম্যাটিস বলেছেন, পাকাপাকি ভাবে উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ না করলে তাদের জন্য কোনও রকম আর্থিক সাহায্য অনুমোদন করবে না আমেরিকা। এ বিষয়ে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়াকে প্রামাণ্য এবং চিরস্থায়ী পদক্ষেপ করতে হবে। একই সঙ্গে ম্যাটিস জানান, উত্তর কোরিয়ার সীমান্ত বরাবর দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন সেনাদল কমানো হবে কি না, তা নিয়ে এই বৈঠকে কোনও আলোচনা হবে না।
আমেরিকাকে টক্কর দিতে বরাবর পরমাণু অস্ত্রের জুজু দেখিয়ে এসেছে উত্তর কোরিয়া। এ দিকে উত্তর কোরিয়াকে পাকাপাকি ভাবে পরমাণু অস্ত্রহীন করতে নাছোড় আমেরিকাও। এ নিয়ে দীর্ঘ চাপান-উতোরের পরে শেষ পর্যন্ত আগামী ১২ জুন বৈঠকে বসতে রাজি হন দু’দেশের রাষ্ট্রনায়কেরা। যদিও দিন-ক্ষণ ঘোষণার পরেও নাটক কম হয়নি। কয়েক সপ্তাহ আগেই কিমকে চিঠি পাঠিয়ে বৈঠক বাতিল করার কথা জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। কারণ, এত কিছুর পরেও পরমাণু অস্ত্র নিয়ে নাড়াচাড়া বন্ধ করেনি পিয়ংইয়্যাং। বেফাঁস মন্তব্য করেছিলেন কিমও। কিন্তু তার পরেও বৈঠকে বসতে চেয়ে উত্তর কোরিয়ার শাসক দলের ভাইস চেয়ারম্যানের হাত দিয়ে ট্রাম্পকে চিঠি পাঠান কিম। বৈঠক সফল করতে দু’দেশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা দফায় দফায় আলোচনা চালান। এর পরেই সুর নামিয়ে ট্রাম্প জানান, ১২ জুনের বৈঠকে তিনি থাকছেন।
তবে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কিমের দেশ আপাতত যতই উৎসাহ দেখাক না কেন, প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়া বা জাপান শুধু কথার মায়ায় ভুলছে না। শনিবার শাংগ্রি-লা বৈঠকে জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইৎসুনোরি ওনোদেরা বলেন, সম্প্রতি উত্তর কোরিয়া হাবেভাবে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু না আঁচালে বিশ্বাস নেই। বিষয়টি নিয়ে কিমের দেশ সদর্থক পদক্ষেপ না করলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় শান্তি অধরাই থাকবে।
পিয়ংইয়্যাংয়ের কার্যকলাপে একই রকম সন্দিহান দক্ষিণ কোরিয়াও। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে অতীতে বার বার মত বদলেছে কিমের সরকার। তাই যতই ঘটা করে বৈঠক হোক না কেন, তা ফলপ্রসূ হওয়া নিয়ে সন্দেহ রয়েই যাচ্ছে।