নিজস্বী-অত্যাচার। তাইল্যান্ডে। — নিজস্ব চিত্র
সরু লিকলিকে একটা লাঠির খোঁচা মেরে ছেলেটি বলছে— ‘‘বড়, বড় করে...।’’
ত্রিশ পাটি দাঁত বের করে অতিকায় শার্দূল সে কথা রাখতেই পিছনে সিংহাসনে বসে থাকা মেয়েটির মোবাইল ঝলসে উঠছে— টাইগার সেলফি!
মাস কয়েক আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছে তাইল্যান্ডের বাঘ-মন্দির। আফিঙে বুঁদ হয়ে থাকা সেই মন্দিরের নির্বিরোধী বাঘেদের সঙ্গে খুশি মতো ছবি তোলার হিড়িকে ভাঁটা পড়েছে।
তাতে অবশ্য দমেনি তাইল্যান্ডের ‘ব্যাঘ্র পর্যটন’। শুরু হয়েছিল পোষা বাঘের সঙ্গে নিজস্বী তোলার নয়া ব্যবসা— ‘সেলফি উইথ টাইগার’।
শুক্রবার, ‘আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবসে’, শ্যাম দেশের পর্যটন শিল্প থেকে সেই ব্যবসাকেও পাততাড়ি গোটাতে বলা হল। সে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশ মন্ত্রকের সচিব চোটি তারছু ই-মেল বার্তায় জানাচ্ছেন, ‘এক দিনেই হয়তো সাফল্য আসবে না। তবে সব দেশের পর্যটকদেরই এ ব্যপারে সহযোগিতা করতে অনুরোধ করা হচ্ছে। বাঘের সঙ্গে নিজস্বী তুলবেন না’
সে বার্তায় সাড়া দিয়েছে ভারতও। বাঘ সংরক্ষণে ভারতের সর্বোচ্চ সংস্থা ‘ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি’ (এনটিসিএ)। এগিয়ে এসেছে এ দেশের পর্যটন মন্ত্রকও। তাইল্যান্ড বেড়াতে গেলে, ভুলেও বাঘের যেন সঙ্গে নিজস্বী তুলবেন না— মনে করিয়ে দিচ্ছে দেশের পর্যটন মন্ত্রকের নয়া বিজ্ঞপ্তি। এনটিসিএ-র এক কর্তা জানাচ্ছেন, দু-এক দিনের মধ্যেই তা নিয়ে এক যোগে প্রচার শুরু হতে চলেছে।
তবে বাঘের সঙ্গে নিজস্বী তোলা নিয়ে আপত্তিটা প্রথম তুলেছিল, আন্তর্জাতিক পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ড অ্যানিম্যাল প্রোটেকশন’। ওই সংস্থার প্রোজেক্ট ম্যানেজার শুভব্রত ঘোষ জানাচ্ছেন, তাইল্যান্ডের বিভিন্ন পার্কে অন্তত ৮৩০টি বাঘকে বন্দি করে রেখে ফলাও ব্যবসা চলছে সে দেশে। বিশ্ব জুড়ে বন্দি-বাঘের প্রায় ৩৩ শতাংশই রয়েছে সে দেশে। যে ব্যবসার চালু নাম— ‘টাইগার এন্টারটেনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি’। কৃত্রিম উপায়ে বন্দি বাঘের প্রজনন ঘটিয়ে বাঘ-বিকিকিনিও চলছে সে দেশে।