বিস্তর বোমাবাজির পর আচমকাই সুর নরম। আমেরিকা আর দক্ষিণ কোরিয়া সেনা অভিযান বন্ধ রাখলে তাঁরাও পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা বন্ধে রাজি বলে মন্তব্য করলেন উত্তর কোরিয়ার বিদেশমন্ত্রী রি সু ইয়ং।
আপাতত রাষ্টপুঞ্জের সম্মেলনে যোগ দিতে আমেরিকায় এসেছেন কিম জং উনের বিদেশমন্ত্রী। এখানেই এই প্রথম বার কোনও বিদেশি সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুললেন রি। দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুর নরম করার পাশাপাশি মার্কিন আগ্রাসনকেও একহাত নিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, আমেরিকার শত্রু মনোভাবের জন্য আত্মরক্ষার স্বার্থেই উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্র বানানোয় নজর দিতে হয়েছে। তাদের শক্তি প্রদশর্নের এই জেদ আরও বেড়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের একের পর এক নিষেধাজ্ঞার ঠেলায়।
তবে কোরীয় উপদ্বীপ এলাকায় উত্তেজনা যে ভাবে বাড়ছে, তা এখনই না থামালে ভবিষ্যতে যে ধ্বংসের দিকে ঠেলে নিয়ে যাবে তা রীতিমতো মালুম হচ্ছে উত্তর কোরিয়ারও। আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিশেষজ্ঞদের মতে, সেই দায় থেকেই এ বার কিছুটা সংযমের সুর রি-এর গলায়। উত্তর কোরিয়ার খবরের কাগজে যে বিস্ফোরক কথাবার্তা সাধারণত বলে থাকেন সে দেশের বিদেশমন্ত্রী, কাল অবশ্য তার ছিটেফোঁটাও ছিল না তাঁর গলায়। সংযত ভঙ্গিতেই জানিয়েছেন, যে বিশাল বহর নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে আমেরিকা ও সে দেশের সেনার যৌথ মহড়া হচ্ছে, তাতে অশনি সঙ্কেত দেখছেন তাঁরা। আর সে কারণেই একের পর এর পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষায় মেতেছেন শাসক কিম জং উন। এখন শান্তি ফেরাতে শত্রুপক্ষ যদি চোখরাঙানি থামায়, জবাব দিতে দেরি করবে না উত্তর কোরিয়াও। তবে তার জন্য প্রথম পদক্ষেপ করতে হবে বিরোধী রাষ্ট্রগুলোকেই।
কিমের দেশের এই শান্তির বার্তা আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার কানে কতটা পৌঁছবে, তা নিয়ে অবশ্য ধন্দ রয়েই যাচ্ছে। কারণ আগেও এক বার এ রকম ইঙ্গিত দিয়েছিল তারা। কিন্তু আমেরিকার পাল্টা শর্ত ছিল, আলোচনার টেবিলে বসার আগে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা থেকে পিছু হটতে হবে উত্তর কোরিয়াকে। এ বারও সন্ধি প্রস্তাব মানার আগে তাদের সেই অবস্থান বদলের বিশেষ সম্ভাবনা নেই।
‘অচ্ছে দিন’-এর লক্ষ্যে এ বার সত্যিই কি তা হলে এগিয়ে আসবে কিমের দেশ? শুধু কথায় নয়, কাজেও দেখা যাবে তাদের এই চেষ্টা— আপাতত সেই উত্তরের অপেক্ষাতেই গোটা দুনিয়া।