কাবুলে জোড়া মানববোমার ধাক্কা। রাজপথে পড়ে রয়েছে দেহ। ছবি: রয়টার্স।
যাত্রীদের জীবনের কথা মাথায় রেখে বিমা চালু করছে রেল। যে জীবন মূল্যবান, তার সম্ভাব্য ক্ষতির পূরণের চেষ্টা।
জীবন যে মূল্যবান, এই সহজ সত্যটাই ভুলতে বসেছি। মিউনিখে ম্যাকডোনাল্ডসে যে কিশোররা জীবনের স্বাদ পেতে এসেছিল, নিসে আপামর ওই যে অজস্র মানুষ জীবনের জয়গাথার উত্সবে মত্ত ছিলেন, কাবুলে অসংখ্য যে লোক আরও একটু ভাল জীবনেরই সন্ধানে বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন, তাঁদের জীবনের মূল্য কী? শোলাকিয়া বা ঢাকায়, মুম্বইয়ে বা জয়পুরে, ইরাকে বা সিরিয়ায়, আফগানিস্তানে অথবা পাকিস্তানে— আচমকা, এক লহমায় অসংখ্য মানুষ এক আর্তনাদে সামিল হয়ে যাচ্ছেন যখন, জীবন তাঁদের ক্ষেত্রে কী অর্থে মূল্যবান থাকছে?
অথচ তাঁরা, তাঁদের এখনও জীবিত আত্মীয়-বন্ধুরা ওই জীবনকে মূল্যবান ভেবে এসেছেন। ভাবেন এখনও। ভাবে না মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তি। নিজের জীবনকেও মূল্যবান ভাবে না বলেই অন্যের কোনও দামই আর থাকে না তাদের কাছে। একাকী নেকড়ে, লোন উলফ অথবা জনা কয়েক মিলে অনেক মানুষ মেরে সব শেষে নিজেরাও মরে যাও। অসংখ্য নিরীহ, ধর্মভীরু, শান্তিপূর্ণ মানুষের মৃত্যু কোন ক্ষমতাকেন্দ্রকে আঘাত করার হাতিয়ার, কার বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ— এই সব প্রশ্নকে অবান্তর করে দিয়ে আপাতত মৃত্যুর মিছিল।
জীবন মূল্যবান থেকেছে এ যাবত্ তার নিজের দ্যুতিতে। কত কী করার রয়েছে, এই বোধই হীরকখচিত করেছে জীবনের বোধকে। ইদানীং অন্য কারণে জীবনকে মূল্যবান লাগছে। যে কোনও মুহূর্তে, এক অঙ্গুলিহেলনে খোওয়া যেতে পারে, অতএব মূল্য বাড়ছে জীবনের। তার দামটা যেন টের পাওয়া যাচ্ছে। গোপন কুলুঙ্গিতে লুকিয়ে রাখতে ইচ্ছে করছে ভোমরাটাকে।
এই কি জীবন? এর বিমা হয়?