পাক বিদেশমন্ত্রী খাজা মহম্মদ আসিফ।
সন্ত্রাস নিয়ে ব্রিক্সের মঞ্চে মুখ পোড়ার পরে ক্ষত মেরামতের চেষ্টায় নেমেছে ইসলামাবাদ। এই প্রসঙ্গে আজ বলতে গিয়ে পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসবাদ যে জাঁকিয়ে বসেছে, তা এক প্রকার স্বীকারই করে নিলেন পাক বিদেশমন্ত্রী খাজা মহম্মদ আসিফ। পাক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘লস্কর-ই-তইবা, জইশ-ই-মহম্মদের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আন্তর্জাতিক স্তরে অস্বস্তি এড়ানো সম্ভব নয়।’’ ব্রিক্সের মঞ্চে ভারতের সঙ্গে গলা মিলিয়ে চিনও পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠগুলির নিন্দা করায় অস্বস্তি আরও বেড়েছে পাকিস্তানের। এরই মধ্যে কাল, শুক্রবার, চিন সফরে যাচ্ছেন আসিফ।
কয়েক সপ্তাহ ধরেই সন্ত্রাসের প্রশ্নে প্রবল আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পাকিস্তান। ওয়াশিংটন এবং ব্রিক্সের মঞ্চ থেকে সমালোচিত হওয়ার পরে এই অস্বস্তি ঝেড়ে ফেলতে তৎপর হয়ে উঠেছিলেন পাকিস্তানি প্রেসিডেন্ট মামুন হোসেন এবং পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খুররম দস্তগির। বৃহস্পতিবার ফের আমেরিকা জানিয়েছে, পাকিস্তানের মাটিতে ঘাঁটি গেড়ে থাকা জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির প্রতি ইসলামাবাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে এবং সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।
এর পরেই মুখরক্ষা করতে এ দিন আসরে নেমেছেন আসিফ। পাকিস্তানে যে জঙ্গিরা সক্রিয় রয়েছে, তা মেনে নিয়েই তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তানের মাটিতে লস্কর-ই-তইবা, জইশ-ই-মহম্মদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগে আমাদের নিজের ঘর পরিস্কার করতে হবে। আন্তর্জাতিক স্তরে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে হবে।’’ তবে একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, ব্রিক্সের এই ঘোষণাপত্র চিনের সরকারি মত নয়। কারণ ভারত, ব্রাজিল, রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাও এই গোষ্ঠীতে রয়েছে। পাক বিদেশমন্ত্রীর কথায়, ‘‘আন্তর্জাতিক মহলে যারা আমাদের বন্ধু, তাদের বোঝাতে হবে আমরা আমাদের ঘরটাকে আগের থেকে ভাল জায়গায় নিয়ে এসেছি।’’
এই কথা বোঝাতেই শুক্রবার ‘বন্ধু’ দেশ চিন সফরে যাচ্ছেন আসিফ। বৃহস্পতিবার বেজিং জানিয়েছে, আসিফকে চিনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, ‘‘শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই এবং চিনের নেতারা আসিফের সঙ্গে বৈঠক করবেন।’’ সূত্রের খবর, চিনের পাশাপাশি রাশিয়া, তুরস্ক এবং ইরান সফরও করতে পারেন আসিফ। সন্ত্রাসের প্রশ্নে এই দেশগুলিকে পাশে পাওয়াই লক্ষ্য ইসলামাবাদের।