কুলভূষণ যাদব।-ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের সরকার আর সেনাবাহিনী যে এখনও ‘আত্মার আত্মীয়’ তা আরও এক বার প্রমাণ হয়ে গেল ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রাক্তন অফিসার কুলভূষণ যাদব মামলায়!
ওই মামলায় পাক সেনাবাহিনী কী করতে চলেছে, তা ঘোষণা করলেন পাকিস্তানের আইনসভা ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার।
আর কুলভূষণ যাদব মামলায় প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ সরকার কী করতে পারে, তা জানিয়ে দিলেন পাক সেনাবাহিনীর মুখাপাত্র!
কুলভূষণ যাদব মামলায় শুধু পাকিস্তান সরকারই নয়, আন্তর্জাতিক আদালতে একই সঙ্গে লড়বে পাক সেনাবাহিনীও। পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার সর্দার আয়াজ সাদিককে উদ্ধৃত করে এই খবর দিয়েছে রেডিও পাকিস্তান। কোনও ‘জাতীয় ইস্যু’তে কোনও দেশের সরকারের সঙ্গে সেই দেশের সেনাবাহিনীর সুর মিলে যাওয়াটা ততটা বিস্ময়ের নয়, কিন্তু সেনাবাহিনীও যে আন্তর্জাতিক আদালতে কুলভূষণ যাদব মামলা লড়বে, সেটা এক জন রাজনীতিক ঘোষণা করায় অনেকেই অবাক হয়ে গিয়েছেন। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকারের ওই ঘোষণা পাকিস্তানে সরকারটা আদতে কে চালায়, সেই চিরাচরিত প্রশ্নটাকে ফের উসকে দিল।
ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার সাদিকের গতকালের ওই ঘোষণাকে উদ্ধৃত করে শুধুই যে সরকারি সংবাদমাধ্যম রেডিও পাকিস্তান খবর করেছে, তাই নয়; সরকার-ঘেঁষা পাক সংবাদপত্র ‘দ্য নেশন’ও দিয়েছে একই খবর। তাঁর গতকালের ভাষণে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার সাদিক এও বলেছেন, ‘‘এখনই জোট বাঁধার সময়।’’ রাজনীতিকরা মনে করছেন, এ কথা বলে স্পিকার সাদিক পাক সেনাবাহিনী ও সরকারের মধ্যে জোট বাঁধার প্রয়োজনীয়তাই বোঝাতে চেয়েছেন। আর ‘গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে’ পাকিস্তানে আটক ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রাক্তন অফিসার কুলভূষণ যাদবকে ‘জঙ্গি’ আখ্যা দিয়ে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির স্পিকার বলেছেন, ‘‘রাজনীতিকদের মাথায় রাখা উচিত, তাঁদের মন্তব্য যেন জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে। অনেকেই সেটা ভুলে যান বলে অতীতে আমরা অনেক গুনাগার দিয়েছি। কাউকে কাউকে আড়াল করার জন্য অনেক খেসারত দিতে হয়েছে আমাদের, অতীতে।’’
আরও পড়ুন- কূলভূষণ মামলায় লড়বেন পাক অ্যাটর্নি জেনারেলই
পাক সেনাবাহিনী কী করবে, সেই কথাটা যেমন বেরিয়ে এসেছে এক জন পাক রাজনীতিকের মুখ থেকে, তেমনই কুলভূষণ মামলায় আন্তর্জাতিক আদালত পাকিস্তানকে কিছু অনুরোধ করলে ইসলামাবাদও যথাযথ জায়গায় তার জবাব দেবে বলে জানিয়েছেন পাক সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর।