পাকিস্তান সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে আফগান তালিবান বাহিনী। —ফাইল চিত্র।
আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালিবান বাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তান সেনার সংঘর্ষে অন্তত ৫৮ জন পাক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করল কাবুল। এ ছাড়া, পাকিস্তানের একাধিক ঘাঁটিও তারা দখল করে নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। পাল্টা পাকিস্তান দাবি করছে, আফগান সীমান্তের ১৯টি ঘাঁটি এখন তাদের দখলে। সেখানকার তালিবান সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে। দুই দেশের সংঘর্ষে উত্তাপ ক্রমশ বাড়ছে। ইতিমধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের বার্তা দিয়েছে একাধিক দেশ।
আফগানিস্তানের হেলমন্দ প্রদেশেই ১৫ জন পাক সেনা জওয়ান আফগানদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে তালিবান। হেলমন্দের প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র মলাওয়ি মহম্মদ কাসিম রিয়াজ় জানান, শনিবার রাতে পাকিস্তানে যে অভিযান চালানো হয়েছে, তাতে এই ১৫ জন পাক সেনার মৃত্যু হয়েছে। ডুরান্ড লাইনের সংঘর্ষে তিনটি পাকিস্তানি ঘাঁটি আফগান তালিবান বাহিনী দখল করেছে বলেও তিনি দাবি করেছেন। সে সব ঘাঁটি থেকে অস্ত্রসশস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পরে তালিবানের মুখপাত্র জ়াবিহুল্লা মুজাহিদ জানান, আফগানের হামলায় নিহত পাক জওয়ানের সংখ্যা ৫৮, আহত আরও ৩০ জন।
পাকিস্তানের দাবি, আফগানিস্তানের সীমান্তে ১৯টি ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে তাদের সেনা। সরকারি সংবাদমাধ্যম পিটিভি নিউজ় বলছে, ‘‘এখনও পর্যন্ত সীমান্তে পাকিস্তান ১৯টি আফগান ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে। ওই ঘাঁটিগুলি থেকেই হামলা হয়েছিল।’’ সূত্রের খবর, ওই ঘাঁটিগুলিতে যত জন আফগান তালিবানকে পাওয়া গিয়েছে, হত্যা করা হয়েছে। বাকিরা পালিয়ে গিয়েছে। রেডিয়ো পাকিস্তান নিরাপত্তাবাহিনীর সূত্র উল্লেখ করে দাবি করেছে, পাকিস্তানি সেনা আফগান তালিবানের মানোজবা ক্যাম্প ব্যাটেলিয়নের সদর দফতর, জনদুসর ঘাঁটি, তুর্কমেনজ়াই ঘাঁটি এবং খরচার দুর্গ ধ্বংস করেছে।’’ পাকিস্তানের দাবি, সীমান্তে তাদের সেনা প্রস্তুত এবং সদা সতর্ক ছিল। তাই আফগানিস্তানের দিক থেকে হামলার সঙ্গে সঙ্গেই জবাব দেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানি সেনা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে আকাশপথে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সেখান থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। কাবুলের দক্ষিণ-পূর্বে পর পর দু’টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছিল। এই ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আফগান সার্বভৌমত্বে আঘাতের অভিযোগ আনে তালিবান সরকার। দাবি, তার জবাব দেওয়া হয়েছে শনিবারের হামলায়।