প্রতীকী ছবি।
ভারত শত্রু নয়। বিপদও নয়। বন্ধু দেশ। ভারতের দিকে সব সময় সঙ্গিন উঁচিয়ে রাখার মনোভাব বদলাতে হবে ইসলামাবাদকে।
পাকিস্তানকে এ ভাবেই বোঝানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ওয়াশিংটন।
সোমবার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে আক্ষেপের সুরে এমনটাই বলেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খুররম দস্তগির খান।
দেশের বিদেশনীতি ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে সরকারি নীতির কথা জানাতে গিয়ে পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, ‘‘নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) ও সীমান্তে ভারতের আগ্রাসী মনোভাব, বাড়াবাড়িকে আমেরিকা হাল্কা ভাবে দেখছে। তাই ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনায় বসার সময় ইসলামাবাদকে এ বার সব কিছুই টেবিলে ফেলতে হবে। যাতে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়।’’
ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর ওই বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে সে দেশের দৈনিক সংবাদপত্র ‘দ্য ডন’-এ। দৈনিকটির রিপোর্ট জানাচ্ছে, পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী গতকাল ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে বলেছেন, ‘‘ভারত সম্পর্কে আমেরিকার এই মনোভাবই ইসলামাবাদ ও ওয়াশিংটনের ভুল বোঝাবুঝির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’’
আরও পড়ুন- ডোকলাম নিয়ে বিপিনের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ চিন
আরও পড়ুন- বাগ্যুদ্ধে কাজ হয়নি, কূটনীতির পথে পাকিস্তান
পাক ভূখণ্ডে ঘাঁটি গেড়ে থাকা সন্ত্রাসবাদীদের এখনও অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে মদত দিচ্ছে বলে ওয়াশিংটন যে অভিযোগ করে চলেছে বহু দিন ধরে, তা উড়িয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী।
আমেরিকা ও ভারতের সঙ্গে কোথায় ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হচ্ছে ইসলামাবাদের, তা বোঝাতে পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দাবি, করাচি ও বালুচিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রশাসনে চলা উপজাতি এলাকাগুলি (এফএটিএ বা ‘ফাটা’) ইতিমধ্যেই ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছে অভিযান ‘জার্ব-ই-আজ্ব’-এর মাধ্যমে। খুররমের কথায়, ‘‘পাক ভূখণ্ডে সন্ত্রাসবাদীদের আর কোনও ঘাঁটি নেই।’’
তবে শুধু আক্ষেপ করেই ‘রণে ক্ষান্ত’ হননি পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। খুররমের বক্তব্য, ‘‘সত্যিটা তো সত্যিই। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বহর ও শক্তি যে ভাবে বাড়ানো হচ্ছে আর তার যা ফন্দি, তা পাকিস্তানের কাছে শত্রুতারই সামিল।’’
এ কথা কেন বলছেন, তা বোঝাতে পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে দেওয়া তাঁর বিবৃতিতে জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত আফগানিস্তানের মাটিকে ব্যবহার করছে। পাক সীমান্তেই জওয়ান, অস্ত্রশস্ত্র বেশি মজুত করছে ভারত। সাম্প্রতিক কালে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরনোর সবচেয়ে বেশি ঘটনা ভারতীয় জওয়ানরাই ঘটিয়েছেন ২০১৭-য়।
খুররমের কথায়, ‘‘দিল্লিতে এখন যাঁরা সরকার চালাচ্ছেন, তাঁদের জন্যই শান্তি আলোচনার পথ সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে।’’