ঋণের ফাঁদ! চিনা প্রকল্পে দোটানায় পাকিস্তান

ইমরানের দাবি, তাঁর পূর্বসূরি নওয়াজ শরিফ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগেই দেশের মাথায় বিস্তর ঋণের বোঝা চাপিয়ে গিয়েছেন। নগদ সঙ্কটে জেরবার তাঁর প্রশাসন গত কালই বাঁধ তৈরির জন্য ১৪০০ কোটি ডলার দানের আর্জি রেখেছে আমজনতার কাছে।

Advertisement

ইসলামাবাদ

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:১৮
Share:

ইমরান খান। ফাইল চিত্র।

চিনের ‘চেক বুক কূটনীতি’ই ফের চিন্তা বাড়াচ্ছে পাকিস্তানের। আরব সাগরের উপকূলবর্তী শহর করাচি থেকে উত্তর-পশ্চিমের পেশোয়ার পর্যন্ত ঔপনিবেশিক আমলের রেললাইন ঢেলে সাজানোর প্রস্তাব দিয়েছে বেজিং। প্রায় আটশো কোটির এই প্রকল্পের পোশাকি নাম ‘চিনা সিল্ক রোড’। তাদের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোডে’র আওতায় এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করতে গিয়ে চিনা প্রেসিডেন্ট ২০১৩-তেই ঘোষণা করেছিলেন যে, এই খরচের একটা বড় অংশ দেবে বেজিং। কিন্তু এ সব ঋণের ফাঁদ নয় তো— সদ্য ক্ষমতায় আসা পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মাথায় এখন এই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে।

Advertisement

ইমরানের দাবি, তাঁর পূর্বসূরি নওয়াজ শরিফ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগেই দেশের মাথায় বিস্তর ঋণের বোঝা চাপিয়ে গিয়েছেন। নগদ সঙ্কটে জেরবার তাঁর প্রশাসন গত কালই বাঁধ তৈরির জন্য ১৪০০ কোটি ডলার দানের আর্জি রেখেছে আমজনতার কাছে। চিনের প্রস্তাবিত সিল্ক রোডের ‘অনুদান’ নিয়েও তাই কোনও রকম ঝুঁকির পথে হাঁটতে নারাজ ইসলামাবাদ। পাক নীতি ও পরিকল্পনা মন্ত্রকের মন্ত্রী খুশরো বখতিয়ারের কথায়, ‘‘এ ক্ষেত্রে আমাদের এমন কোনও বিশেষ মডেলের কথা ভাবতে হবে, যাতে পাক সরকারকে ফের কোনও ঋণের ধাক্কা সামলাতে না হয়।’’

নয়া পাক সরকারের দাবি, শি চিনফিংয়ের সঙ্গে নওয়াজের আমলে হওয়া বেশির ভাগ চুক্তিই অর্থহীন এবং চিনের পক্ষে গিয়েছে। মারাত্মক রকমের ব্যয়বহুল তো বটেই। সম্প্রতি আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— চিনের এই প্রকল্পে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, কম্বোডিয়া, মলদ্বীপের মতো অন্তত ১৬টি দেশ বেজিংয়ের থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়ে বসে আছে। কিন্তু পাকিস্তানের পক্ষে যে এই ঋণ শোধ করা সম্ভব নয়, সেটা ভালই বুঝেছেন ইমরান। সেই কারণেই, চিনের পাঁচ বছরের পুরনো ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের কিছু অংশ নতুন করে খতিয়ে দেখতে চাইছে তাঁর প্রশাসন।

Advertisement

বেজিং অবশ্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যে সব প্রকল্প এখনও শুরু হয়নি, শুধু সেগুলিই তারা পুনর্বিবেচনা করতে রাজি। ঋণের বোঝা নিয়ে আশঙ্কা তাই থাকছেই। থাকছে হতাশাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইমরানের এক মন্ত্রী যেমন বলেই ফেললেন, ‘‘মাথাব্যথা অনেক। কিন্তু ঋণ না নিয়েই বা উপায় কী? কোনও দেশই তো পাকিস্তানে বিনিয়োগে রাজি নয় দেখছি।’’

সংবাদ সংস্থা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন