Kashmir

কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে এ বার রাষ্ট্রপুঞ্জে গেলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান

তর সইল না পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের। কাশ্মীর নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারস্থ হলেন তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

রাষ্ট্রপুঞ্জ শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৫:৩৮
Share:

ইমরান খান।—ফাইল চিত্র।

আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন নিজেই। ইতিবাচক বার্তা গিয়েছিল ভারতের তরফেও। কিন্তু আর তর সইল না পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের। বরং সরাসরি রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারস্থ হলেন তিনি।

Advertisement

মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুটারেসকে ফোন করে নতুন করে কাশ্মীর প্রসঙ্গ খুঁচিয়ে তুললেন তিনি। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুটারেসের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবের সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রীর কী কথা হয়েছে তা অবশ্য খোলসা করেননি তিনি। তবে জানিয়েছেন, নিজে থেকে ফোন করেছিলেন ইমরান।

স্বাধীনতার পর থেকে কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে টানাপড়েন চলছে। দিল্লি অবশ্য নিজেদের অবস্থানে অনড়। কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ, তাতে পাকিস্তানের নাক গলানো উচিত নয় বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছে। তা সত্ত্বেও হাল ছাড়তে নারাজ ইসলামাবাদ। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে দুজারিক বলেন, ‘‘কাশ্মীর নিয়ে আমাদের অবস্থান তো স্পষ্টই। নিরাপত্তা পরিষদের তরফে নজরদারি কমিশন বসানো হয়েছে। তারাই বিষয়টি দেখছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে কথা বলবেন, এটাই স্বাভাবিক। তাই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলেছেন। ইমরান খান নিজে ফোন করে কাশ্মীর প্রসঙ্গ তোলেন।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: সরকারি অফিসে শাটডাউন, আমেরিকায় বেতন হচ্ছে না ৮ লক্ষ কর্মচারীর​

আরও পড়ুন: ‘২৫ বছরের রাজত্ব উপড়ে দিলাম, ইনি তো মাত্র ৭ বছর’

নিরাপত্তা পরিষদের যে নজরদারি কমিশনের কথা বলছেন দুজারিক, ১৯৪৯ সালের জানুয়ারি মাসে রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং সদস্য দেশগুলির ১১৮ জন সদস্য নিয়ে সেটি গঠিত হয়েছিল। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে অস্ত্রবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তার পরের বছর হিমাচল প্রদেশের শিমলায় বৈঠকে বসেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী এবং পাকিস্তানের তত্কালীন প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলি ভুট্টো।রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের নজরদারি কমিশনের তত্ত্বাবধানে দুই দেশের মধ্যে কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখা গড়ে ওঠে, যাতে তা পেরিয়ে এক দেশ অন্য দেশের উপর হামলা করতে না পারে। নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘিত হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে রাষ্ট্রপুঞ্জকে অবগত করানোর দায়িত্ব বর্তায় ওই নজরদারি কমিশনের উপরে। কিন্তু গত কয়েক দশকে বার বার নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। ভারতে নাশকতায় মদত জুগিয়েছে। অশান্ত করে তুলেছে কাশ্মীর উপত্যকার পরিস্থিতি। তার জেরে ওই কমিশনের কার্যকারিতা নিয়ে একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছে দিল্লি। কাশ্মীরের উপর পাকিস্তানের যাবতীয় দাবি-দাওয়াও খারিজ করেছে।

তাই নতুন করে কাশ্মীর প্রসঙ্গ খুঁচিয়ে তোলায় অসন্তুষ্ট ভারত সরকার। ক্রিকেটের সূত্রে একসময় নিয়মিত ভারতে আসা-যাওয়া ছিল ইমরান খানের। পূর্ববর্তী নেতাদের তুলনায় তাঁর চিন্তাভাবনা কিছুটা আলাদা হবে বলেই আশা ছিল কূটনৈতিক মহলের। এ বছর ক্ষমতায় বসে তিনি নিজেও তেমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কাশ্মীর নিয়ে শান্তিপূর্ণ আলোচনায় আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। টেলিভিশনের সামনে আলোচনায় আগ্রহ দেখালেও, নিজের টুইটার হ্যান্ডলে উস্কানিমূলক মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। কখনও লিখেছেন, কাশ্মীরিদের উপরই সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেওয়া হোক, তো কখনও আবার ভারতের বিরুদ্ধে সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন করার অভিযোগও তুলেছেন। এমনকি আন্তর্জাতিক মহলে বিষয়টি তোলার হুমকিও দিয়েছেন। তাঁর এমন আচরণ নজর এড়ায়নি দিল্লির। কিছুদিন আগেই তাঁর তীব্র সমালোচনা করেন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবিশ কুমার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন