আফগানদের পাকিস্তান ছাড়তেই হবে, বললেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের সঙ্গে সংঘাতের আবহে এ বার পাকিস্তানে বসবাসকারী আফগানদের দেশ ছাড়তে বলল ইসলামাবাদ। শুক্রবার এই বিষয়ে সুর চড়ান পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ। সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, “পাকিস্তানের মাটিতে থাকা সব আফগানকে তাঁদের জন্মভূমিতে ফিরে যেতে হবে।” কাবুলের সঙ্গে ইসলামাবাদের সম্পর্ক আগের মতো নেই বলেও জানান তিনি।
গত এক সপ্তাহ ধরে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। বুধবার ৪৮ ঘণ্টার সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করেছিল দুই দেশ। তার মেয়াদ শেষ হয়েছে শুক্রবার। তার পরেই রাতে পাকিস্তান হামলা চালায় বলে অভিযোগ। পাক হামলায় মৃত্যু হয়েছে তিন আফগান ক্রিকেটারের। শুক্রবার রাতে আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে আকাশপথে হামলা চালানো হয়। তাতেই তিন জন ক্রিকেটার-সহ মোট আট জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। তিন ক্রিকেটারের নাম এবং ছবি প্রকাশ করেছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি)। নিহতেরা হলেন কবীর, শিবঘাতুল্লা এবং হারুন। এই ঘটনার প্রতিবাদে আগামী নভেম্বরের ত্রিদেশীয় সিরিজ় থেকে দল তুলে নিচ্ছে আফগানিস্তান। সিরিজ়ে পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তাদের খেলার কথা ছিল।
শুক্রবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের মন্ত্রিসভার সদস্য আসিফ সমাজমাধ্যমে লেখেন, “আফগানদের এখন নিজেদের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের দেশের জমি এবং সম্পদের উপর অধিকার রয়েছে কেবল ২৫ কোটি পাকিস্তানির।” একই সঙ্গে আফগানিস্তানের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কের সমীকরণ ব্যাখ্যা করে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী লেখেন, “পাকিস্তান কাবুলের সঙ্গে আগের মতো সম্পর্ক আর রাখতে পারবে না।”
শুক্রবারই পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় পাকিস্তানে আশ্রয় নেওয়া আফগান শরণার্থীদের দ্রুত দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য একটি বৈঠক করেছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, বিভিন্ন প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীদের পাশাপাশি ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন পাক সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরও। বৈঠকের পর সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়, এ পর্যন্ত মোট ১৪ লক্ষ আফগান শরণার্থীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এখনও যাঁরা পাকিস্তানে রয়ে গিয়েছেন, তাঁদের কোনও বাড়তি সময় দেওয়া হবে না বলেও ঘোষণা করেছে ইসলামাবাদ। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী পাকিস্তানের মাটিতে সাড়ে ১৭ লক্ষ আফগান শরণার্থী ছিলেন। পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশ জানাচ্ছে, মূলত দু’টি কারণে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামাবাদ। প্রথমত, দেশের বেহাল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাড়তি ব্যয়বহনের অক্ষমতা। দ্বিতীয়ত, নিরাপত্তা সংক্রান্ত সঙ্কট।