এক সপ্তাহের মধ্যেই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেল পাকিস্তান। দিল্লিতে নিযুক্ত পাক হাইকমিশনার আবদুল বাসিতের ঘোষণা নস্যাৎ করল পাক বিদেশ মন্ত্রক। জানাল, ভারতের সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলাই রেখেছে পাকিস্তান। দু’দেশের মধ্যে নিরন্তর যোগাযোগও হচ্ছে বলে পাক বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে।
ঠিক এক সপ্তাহ আগে নয়াদিল্লিতে পাক হাইকমিশনার আবদুল বাসিত আচমকা ঘোষণা করেছিলেন, ভারতের সঙ্গে শান্তি আলোচনা বন্ধ করে দিচ্ছে পাকিস্তান। বাসিত অভিযোগ করেছিলেন, পাকিস্তানে নাশকতা চালাতে চাইছে ভারত। বালুচিস্তান থেকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। তার প্রেক্ষিতেই শান্তি আলোচনা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বাসিত জানান।
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, আবদুল বাসিতের এই ঘোষণা আসলে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বা পাক সরকারের অবস্থান নয়। সে দেশের সেনাবাহিনীর নির্দেশে বাসিত শান্তি আলোচনা বন্ধ করার কথা ঘোষণা করেছেন। সেই জল্পনায় আরও অক্সিজেন জুগিয়ে ইসলামাবাদের তরফে বৃহস্পতিবার জানানো হয়েছে, ভারতের সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলাই রয়েছে। বন্ধ হয়নি। পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, ‘‘আমাদের সামনের দিকে তাকানো উচিত এবং কোনও পথই বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবা উচিত নয়। উভয় পক্ষই পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছে। পন্থা-পদ্ধতিগুলি চূড়ান্ত হয়ে গেলেই দু’দেশের মধ্যে সচিব পর্যায়ের আলোচনা হবে।’’
আরও পড়ুন:
৬২ লাখে বিক্রি আছেন নওয়াজ শরিফ
পাক বিদেশ মন্ত্রকের এই ঘোষণাকে খুব তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবেই দেখছে কূটনৈতিক মহল। পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জৈশ-ই-মহম্মদ পঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলা চালানোর পর দু’দেশের সম্পর্ক ফের তিক্ততার মুখে পড়েছিল ঠিকই। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী এবং নওয়াজ শরিফ শান্তি আলোচনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার যে চেষ্টা আগে থেকেই শুরু করেছিলেন, তা ধরে রাখতে দু’দেশই আগ্রহ দেখায়। ইসলামাবাদ সূত্রের খবর, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী নওয়াজ-মোদীর এই ‘দোস্তি’ পছন্দ করছে না। সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নওয়াজ সরকারের টানাপড়েনও শুরু হয়েছে। সেনার চাপে বাসিতের এক রকম বয়ান এবং এক সপ্তাহের মধ্যে পাক বিদেশ মন্ত্রকের তরফে উল্টো বিবৃতিতে পাকিস্তানের সেই অভ্যন্তরীণ টানাপড়েন আরও স্পষ্ট হল।