(বাঁ দিকে) পাকিস্তানের সরকারি বিমানসংস্থা পিআইএ এবং পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনির (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
ঘুরপথে পাকিস্তানের সরকারি বিমানসংস্থার নিয়ন্ত্রণ যাচ্ছে পাক সেনার হাতে? এমন জল্পনা ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (আইএমএফ)-এর কাছ থেকে ঋণ পাওয়া সুনিশ্চিত করতে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ)-কে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামাবাদ। সরকারি ওই বিমানসংস্থা কেনার বিষয়ে যে সংস্থাগুলি আগ্রহ দেখিয়েছে, তাদের মধ্যে সর্বাগ্রে রয়েছে চারটি সংস্থা। এই চারটি সংস্থার মধ্যে রয়েছে পাক সেনার নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থা ‘ফৌজি ফাউন্ডেশন’।
বুধবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফকে উদ্ধৃত করে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে ইসলামাবাদ। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পিআইএ-কে নিলামে তোলা হবে আগামী ২৩ ডিসেম্বর। টিভিতে নিলামের সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। গত মাসেই পাকিস্তানের বেসরকারিকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রী মহম্মদ আলি সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন সরকারি সংস্থার বেসরকারিকরণ করে প্রায় ৯৬ কোটি টাকা (ভারতীয় মুদ্রায়) ঘরে তুলতে চাইছে সরকার। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, সরকারি বিমান সংস্থাটির ১৫ শতাংশ অংশীদারি নিজেদের হাতে রেখে বাকি অংশ বেসরকারি হাতেই তুলে দিতে চাইছে ইসলামাবাদ।
পাক সংবাদসংস্থা ‘জিও টিভি’ এবং ‘ডন’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, আইএমএফ-এর শর্ত মেনেই সরকারি বিমানসংস্থাকে বিক্রি করে দিচ্ছে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডারের নতুন অর্থনৈতিক প্যাকেজ পাওয়া সুনিশ্চিত করতে লোকসানে চলা পিআইএ-র ৫১ থেকে ১০০ শতাংশই বিক্রি করে দিতে পারে ইসলামাবাদ।
পাক সেনার নিয়ন্ত্রণাধীন ফৌজি ফাউন্ডেশন সার, সিমেন্ট, বিদ্যুৎ-সহ একাধিক শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। এ বার তাঁরা বিমান পরিষেবা শুরু করার বিষয়েও আগ্রহ দেখাচ্ছে। পাক সেনায় তো বটেই, সে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের ক্ষমতা ক্রমশ বাড়ছে বলে খবর। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সরকারি বিমানসংস্থার মালিকানাও তাঁর সেনার নিয়ন্ত্রণে গেলে বেসামরিক ক্ষেত্রে মুনিরের প্রভাব এবং ক্ষমতা আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। ফৌজি ফাউন্ডেশন ছাড়াও আরও যে তিন সংস্থা নিলামে অংশ নিতে পারে, সেগুলি হল, লাকি সিমেন্ট কনসর্টিয়াম, আরিফ হাবিব কর্পোরেশন কনসর্টিয়াম এবং এয়ার ব্লু লিমিটেড।